হিলি কাস্টমসের তথ্য মতে, চলতি মাসের গেল সাত কর্ম দিবসে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে ভারতীয় ৪৮ ট্রাকে ৪৩৮ মেট্রিক টন। চাল আমদানি হয়েছে ৬১৩ ট্রাকে ২৬ হাজার ৫৫২ মেট্রিক টন। এসময় পেঁয়াজ এসেছে ৭৫ ট্রাকে ২২৩৭ মেট্রিক টন।
হিলি স্থল বন্দরের উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ অফিসের উপ-সহকারী ইউসুফ আলী জানান, সরকার পেঁয়াজের আইপি ১৯ আগস্ট থেকে বন্ধ রেখেছে।
এর আগে হিলি স্থলবন্দরের ৭৮ জন আমদানিকারক ৩০ মেট্রিক টন করে ২৩৪০ মেট্রিক টন আইপির অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে ৭৫ জন পেঁয়াজ আমদানি করেছে আরও তিনজন আমদানিকারক ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবে। আমদানির মেয়াদ আছে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। তাছাড়া ২৫ আগস্ট পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি স্বাভাবিক ছিল।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দরে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম
বৃহস্পতিবার দুপুরে হিলি স্থলবন্দর গিয়ে দেখা যায়, বন্দরের অভ্যন্তরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল বোঝাই ট্রাক। তবে নেই কাঙ্ক্ষিত পাইকার।
বন্দরে কথা হয় চাল ব্যবসায়ী জহরুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, বন্দরে আসছি চাল কেনার জন্য, প্রতিদিন ২-৪ ট্রাক চাল কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করে থাকি। কদিন আগেও চালের বেচাকেনা অনেক বেশি ছিল। দাম কমার কারণে মোকামগুলোতে চালের চাহিদা কমেছে, যার কারণে কিছুটা কম কিনছি চাল।’
নওগাঁ থেকে হিলি বন্দরে চাল কিনতে আসা এনামুল জানান, আজকে বন্দরে চাল বিক্রি হচ্ছে স্বর্না ৫১ টাকা ৫০ পয়সা, তিন দিন আগে ছিল ৫৩ টাকা, একইভাবে শম্পা কাটারি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা ৫০ পয়সা, গত তিন দিন আগে দাম ছিল ৭০ টাকা।
হিলির চাল আমদানিকারকের প্রতিনিধি সনজিৎ জয় সোয়াল জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পর্যাপ্ত চালের আমদানি রয়েছে, যা চাহিদার থেকেও অনেক বেশি। হিলি বন্দরে দেখা নাই কাঙ্ক্ষিত চালের ক্রেতা। এতে করে চালের দাম কমেছে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত। চালের চাহিদা তুলনায় আমদানি পর্যাপ্ত হওয়ার কারণে মূলত চালের দাম কমছে। তাছাড়া মাসের শেষের দিকে কিছুটা চালের বেচা বিক্রিও কম হচ্ছে।
সনজিৎ আরও বলেন, ‘ভারতের মোকামগুলোতে চাল কিনে বন্দরে আসা পর্যন্ত প্রতি কেজি স্বর্না জাতের চালের দাম আসে ৫২ টাকা, সেখানে বিক্রি হচ্ছে ৫১ টাকা দরে। এছাড়াও শম্পা কাঠারি দাম পড়ে ৬৭ টাকা সেটা বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা পর্যন্ত, এতে সবধরনের চাল আমাদের লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও আইপি বন্ধের অজুহাতে বেড়েছে দেশি আমদানিকৃত সবধরনের পেঁয়াজের দাম। এ সুযোগে স্থানীয় বাজারগুলোতে বেড়েছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম ২ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দর দিয়ে বেড়েছে কাঁচামরিচ আমদানি
হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বিপ্লব জানান, সরকার পেঁয়াজের আইপি ১৯ আগস্ট থেকে বন্ধ করে দিলেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২৫ তারিখ পর্যন্ত সবশেষ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলির পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, দেশের বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় ভারত থেকে দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস পর গত ১৪ আগস্ট পেঁয়াজের আইপি দেয় সরকার। ফলে ১৭ আগস্ট রোববার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এতে করে দেশের বাজারে পণ্যটির সররবাহ বাড়ায় দাম কমে আসছিল। আবার ১৯ আগস্ট থেকে বন্ধ হয়ে যায় পেঁয়াজ আমদানির আইপি। সরকার পেঁয়াজের আইপি দেওয়া শুরু করলে পেঁয়াজের আমদানি বাড়বে, দামও কমবে।
]]>