বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপি কার্যালয়ের সামনে সড়কের একপাশে অবস্থান নিয়ে এই আল্টিমেটাম দেন তারা।
এ সময় এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ও বিচারের দাবিতে নানা স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা।
অবস্থানরতরা জানান, গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত এই পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এনসিপির নেতারা।
পরে মশাল মিছিল বের করে আশপাশের রাস্তা প্রদক্ষিণ করেন তারা।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা ছিল দলটির। গত মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নাম দেয়া হয়।
এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরে আজ সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। কাছাকাছি সময়ে হামলা করা হয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি বহরেও। এ দুই ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে জানায় গোপালগঞ্জ পুলিশ।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হলে কঠোর কর্মসূচি: রিফাত রশিদ
দুপুর ১টা ৩৫ মনিটের দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা। তারা মঞ্চে থাকা সাউন্ড বক্স, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং উপস্থিত এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এনসিপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে সরে যান।
এ ঘটনার আধা ঘণ্টা পরে ওই সমাবেশ স্থলেই পুলিশি নিরপত্তায় সমাবেশ করে এনসিপি। সেখানে নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপির নেতাদের গাড়ি বহরে আবারো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় পুলিশও পিছু হটে।
আরও পড়ুন: এনসিপির সমাবেশে হামলা: সরকারের কঠোর বার্তা
এনসিপির নেতাকর্মীরা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা এনসিপির সমাবেশ মঞ্চ এবং আশপাশের বিভিন্ন স্থানে চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্রে অঅগুন ধরিয়ে দেন। এতে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও বাড়তি জনবল নিয়োজিত করা হয়। বিকেলের দিকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হামলা ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়। এরপর সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ একযোগে হামলাকারীদের সরাতে অভিযান শুরু করে।
]]>