সুন্নত পড়াকালে জামাত শুরু হলে করণীয়

৩ সপ্তাহ আগে
নামাজ ইসলামের স্তম্ভসমূহের অন্যতম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি নিয়মিত সুন্নত নামাজ, যা রাসুলুল্লাহ সা. নিয়মিত আদায় করতেন। এ সুন্নত নামাজগুলো বান্দাকে আল্লাহর আরও নিকটবর্তী করে, ফরজ নামাজের ঘাটতি পূরণ করে এবং কিয়ামতের দিনে পরিত্রাণের মাধ্যম হয়। তাই ফরজ নামাজের আগে-পরে এ সুন্নত রাকআতগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

সুন্নত পড়াকালে জামাত শুরু হলে করণীয়

 

ফরজ নামাজের আগে-পরে নির্ধারিত বারো রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। শরীয়তের পরিভাষায় সুন্নত বলা হয়, সেই আমলকে যা ফরজ বা ওয়াজিবের মতো বাধ্যতামূলক নয়, কিন্তু রাসুলুল্লাহ সা. নিয়মিতভাবে তা আদায় করেছেন। (ফিকহুস সুন্নাহ, পৃ. ১৬০)

 

রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,

 

কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে প্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। যদি নামাজ ঠিক থাকে, সে সফল ও মুক্তি লাভ করবে। আর যদি তাতে ঘাটতি থাকে, তবে ধ্বংস ও ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

 

এরপর আল্লাহ ফেরেশতাদের বলবেন, ‘দেখো, আমার বান্দার কোনো নফল নামাজ আছে কি না।’ তখন নফল নামাজ দ্বারা ফরজ নামাজের ঘাটতি পূরণ করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৭৭০)

 

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, সুন্নত ও নফল নামাজ ফরজ নামাজের পরিপূরক এবং আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায়—জোহরের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়ার সময় জামাত শুরু হয়ে যায়। এ অবস্থায় করণীয় হলো: যদি কেউ দুই রাকাত পড়ে ফেলেন, তাহলে সালাম ফিরিয়ে জামাতে শরিক হয়ে যাবেন।

 

আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় স্ত্রী

 

কিন্তু যদি তৃতীয় রাকাত শুরু করে ফেলেন, তাহলে চার রাকাত পূর্ণ করে পরে জামাতে যোগ দেবেন। এই ক্ষেত্রে ছোট ছোট সূরা পড়ে দ্রুত নামাজ শেষ করা উত্তম।

 

তবে জামাত শুরু হয়ে গেলে, আর সময় না থাকলে, সুন্নত নামাজ শুরু না করাই উত্তম। কারণ জামাতের কাতারের পাশে বা কাছাকাছি অবস্থায় সুন্নত বা নফল পড়া মাকরুহ (অপছন্দনীয়)। (আল-মুহিতুল বুরহানি ২/২৪৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৩)

 

সুন্নত নামাজের গুরুত্ব অনেক, কিন্তু জামাতের গুরুত্ব তার চেয়েও বেশি। তাই মুসল্লি যেন সময় বুঝে সুন্নত শুরু করেন, যেন জামাত মিস না হয়। যদি জামাত শুরু হয়ে যায়, তবে শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।

 

ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, ইবাদতে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং প্রতিটি কাজ যথাস্থানে সম্পন্ন করা। ফরজ ও জামাতের গুরুত্ব অগ্রাধিকার দিয়ে সুন্নতের আদব বজায় রাখাই একজন সচেতন মুসলমানের পরিচয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নামাজের আদব ও গুরুত্ব অনুধাবনের তাওফিক দিন। আমিন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন