ব্যস্ত জীবনযাত্রায় চটজলদি খাবারে ভরসা করেন অনেকেই। সেই তালিকায় থাকে স্যান্ডউইচ, বার্গার, পিৎজার মতো খাবার। দিনের পর দিন ক্যালোরি সমৃদ্ধ এই সব খাবার খেলে পেটের সমস্যা তো হবেই! পেট পরিষ্কার না হলে গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা, হজম না হওয়া এসব লেগে থাকবে। তবে এসব সমস্যা সমাধানে দারুণ কাজে আসে কিশমিশ।
কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফাইবার এবং আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আরব দেশে সকালে উঠেই মুখে কিশমিশ রাখার চল রয়েছে। অনেকেই কিশমিশ ভেজানো পানি খান। এ ছাড়াও প্রতিদিন বাদাম, কিশমিশ, আমন্ড, পেস্তা একমুঠো খেতে পারলেও পাবেন দারুণ উপকার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ডায়েটিশিয়ানের মতে, খালি পেটে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ খেলে তা শরীরের নানা উপকার করে। উচ্চরক্তচাপ থেকে শুরু করে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ অনেক সমস্যাই দূর হয় কিশমিশের গুণে। চলুন জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কিশমিশের পানি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য একটি ওষুধ হিসেবে প্রমাণিত। কারণ এতে ফাইবার এবং রেচক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এই ঘরোয়া প্রতিকারটি দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যেও কার্যকর।
গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসা
যারা প্রায়ই গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমের সমস্যায় ভোগেন, তাদের প্রতিদিন খালি পেটে ভেজা কিশমিশ খাওয়া উচিত। এতে তাৎক্ষণিক সুবিধা পাবেন। কিশমিশের পানিতে শীতল করার গুণ রয়েছে, যা পেটে অ্যাসিড কমিয়ে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়। কিশমিশের পানি অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। এটিতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলে পেটের সমস্যা কমতে শুরু করে। কয়েক দিন খেলেই সুফল পেতে শুরু করবেন।
আরও পড়ুন: শিমের বিচি খেলে কী হয়?
হার্ট ভালো রাখে
অনেক চিকিৎসক রোগীকে ওষুধের পাশাপাশি কিশমিশ খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ কিশমিশ হার্টকে ভালো রাখে। সেইসঙ্গে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল দূর করে। কিশমিশে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। কিশমিশ না খেয়ে শুধু কিশমিশের পানি খেলেও সেই ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে প্রবেশ করে। পানিতে ভেজানোর আর একটা কারণ শর্করার মাত্রা কমে।
লিভার ও কিডনি ভালো রাখে
রক্ত পরিষ্কার করতে কিডনির পাশাপাশি লিভারকেও ভালোভাবে কাজ করতে হবে। লিভার ও কিডনির সমস্যা হলে ক্ষতিকারক পদার্থ শরীরে জমতে শুরু করে আমাদের অসুস্থ করে তোলে। তাই লিভার ও কিডনিকে সবসময় চাঙ্গা রাখতে হবে। কিশমিশ ভেজানো পানি সেই কাজটাই ভালোভাবে করে।
পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়
বহু মানুষ অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগেন। তাদের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম। সেসব মানুষকে প্রতিদিন কিশমিশ খাওয়াতে পারলে খুবই ভালো। এক সপ্তাহ খেলেই উপকার পাওয়া শুরু করবেন। এর মধ্যে থাকা গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ সুগার লেভেলও রাখে নিয়ন্ত্রণে।
আরও পড়ুন: ব্রোকলি খেলে কী হয়?
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
কিশমিশের মধ্যে থাকে বেশ কিছু ক্যানসাররোধী উপাদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে থাকে ক্যাটেটিনস ও পলিফেনল, যা ক্যানসার ঠেকাতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
কিশমিশের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম। ফলে তা আমাদের রক্তচাপ রাখে নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে। সেই সঙ্গে রক্তের ঘাটতিও পূরণ হয়। প্রতিদিন খালি পেটে কিশমিশ খেলে রক্তাল্পতা থেকেও রক্ষা পাবেন।
ইমিউনিটি বাড়ায়
কিশমিশের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ। এ ছাড়াও কিশমিশ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। তাই নিয়মিত খেতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই নির্ভয়ে খান কিশমিশ।
সূত্র: এই সময়, টিভি নাইন বাংলা
]]>