শূন্যরেখা অতিক্রম করায় জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি: বিজিবি

‘আরাকান আর্মির হাতে অপহরণ নয়, জলসীমান্তের শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ায়’ নাফ নদী ও সাগর মোহনা থেকে বাংলাদেশি জেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, বাংলাদেশের সাথে থাকা পুরো সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। আর দেশটির অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যে সক্রিয় উঠেছে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্টিও। এ কারণে সীমান্তে আরাকান আর্মির তৎপরতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নাফ নদী ও সাগর মোহনায় জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রমকারী জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
 

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিবির রামু সেক্টর দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন লে. কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
 

আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিনে আরও ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

তিনি বলেন, নাফ নদীর মোহনা সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় প্রকৃতিগত কারণে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কোন কোন সময় জলসীমার মিয়ানমার অভ্যন্তর দিয়ে চলাচল করতে হয়। এছাড়া জেলেরা অনেক সময় ভুলবশত মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এতে আরাকান আর্মির হাতে বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
 

এ নিয়ে আরাকান আর্মির সাথে আন-অফিসিয়ালি যোগাযোগ রয়েছে তথ্য দিয়ে বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ এ পর্যন্ত বাংলাদেশি ৫১ জন জেলে আরাকান আর্মির কাছে জিন্মি রয়েছে। সীমান্ত নন-ফ্যাক্টর গোষ্টি হলেও তাদের সাথে বিজিবির আন-অফিসিয়াল যোগাযোগ রয়েছে। জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের সাথে আলাপ হচ্ছে। আমরা তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছি, যেন আর কোন জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া না হয়।’
 

লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গেলে অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সীমানা মেনে চলতে হবে। এ ব্যাপারে জেলেদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
 

আরও পড়ুন: নাফ নদীতে বেপরোয়া আরাকান আর্মির তাণ্ডবে দিশেহারা বাংলাদেশি জেলেরা

এদিকে মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে সীমান্তে আসা কিছু রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার বলেন, ‘আহত ও অসহায় কিছু রোহিঙ্গার অবস্থা দেখে মানবিকতার খাতিরে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। তবে সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করছি। মাদক ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চলছে।’
 

মহিউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সরকার বিজিবিতে জনবল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সীমান্তে উদ্ভুদ যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। 
 

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নেক অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম ও রামু ৩০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

]]>