রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য নেই, প্রশ্নবিদ্ধ ইপিবি!

৪ সপ্তাহ আগে
বছরের পর বছর রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে কথার ফুলঝুরি ফোটানো হলেও প্রস্ফুটিত হয়নি ধারাবাহিকভাবে এক বিলিয়ন ডলার আয় করার মতো একটি পণ্যও। পাট, চামড়া ও হোম টেক্সটাইল কোনও বছর বিলিয়ন ডলার পার করেছে তো পরের বছরই গেছে পড়ে। এ অবস্থায় রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রফতানিকারকরা।

ইপিবির কার্যক্রম নিয়ে উদ্যোক্তাদের এমন প্রশ্ন তোলার কারণ বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটি রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আটকে আছে তৈরি পোশাকেই। আয় ৫০ বিলিয়ন ডলার ছুঁতে চাইলেও অন্য খাতগুলো ধারে কাছেও নেই।

 

গত পাঁচ অর্থবছরে পাট দুইবার, চামড়া একবার ও হোম-টেক্সটাইল তিনবার আয় করেছে এক বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। আর এক ডজনের বেশি পণ্যসম্ভার নিয়ে তিনবার এক বিলিয়ন ডলার পার করেছে কৃষিখাতের আয়।

 

আরও পড়ুন: রফতানিতে ভাটার টান, নীতি সহায়তা না পেলে আরও অবনতির শঙ্কা

 

তৈরি পোশাকের পর চামড়া খাত সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় হলেও এর যথাযথ উন্নয়নে কাজ করা হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (অ্যামচ্যাম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ইপিবির কাজ হলো এক্সপোর্ট প্রমোশন। কিন্তু সংস্থাটি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না।

 

আর বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, সাভারের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে প্রয়োজনীয় লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেশন এবং আন্তর্জাতিক মান সংস্থার (আইএসও) সনদ অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

সোনালি আঁশের পাটেও গাঁথা যায়নি ধারাবাহিক বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়। কৃষিপণ্যও পারেনি বিদেশের বাজার ধরতে। এজন্য গুণগতমান নিশ্চিতে পরীক্ষাগারের অভাবকে দায়ী করছেন উৎপাদকরা।

 

বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্বে রফতানির বাজারে নানা শর্ত পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময় হোঁচট খেতে হয় রফতানিকারকদের। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে ল্যাব পরীক্ষার সনদ না দিতে পারায় শর্তের বেড়াজালে বাজারের প্রসার করতে পারছে না রফতানিযোগ্য পণ্যের।

 

আরও পড়ুন: রফতানি আয় ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখায় ইপিবি!

 

রফতানি পণ্য বাড়াতে ব্যবসায়ীরা যখন এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরছেন, তখন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, দায় তাদের নয়। বরং সরকারের অন্য সংস্থাগুলোর নীতিই পণ্য বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে বড় বাধা।

 

আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লে পণ্য বহুমুখীকরণের সুযোগ আরও বাড়বে। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ রফতানি দ্রুত বাড়াতে ও বহুমাত্রিক রফতানি করতে সক্ষম হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নির্ভর করে। রফতানি বাড়াতে আমাদেরও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

 

এর বাইরে পণ্য বৈচিত্র্যকরণে ইপিবির সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, পণ্য বৈচিত্রকরণে ইপিবির সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন