পিতা-মাতার দোয়া
পিতা-মাতা সন্তানের জন্য যে দোয়া করেন, তা আল্লাহ তাআলা কখনোই ফিরিয়ে দেন না । রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ثلاثُ دَعواتٍ لا تُرَدُّ: دعوةُ الوالدِ لولدِه، ودعوةُ الصائمِ، ودعوةُ المسافرِ. তিনটি দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় না: পিতার দোয়া সন্তানের জন্য, রোজাদারের দোয়া, এবং মুসাফিরের দোয়া। (সুনানুত তিরমিজি: ১৯০৫) মায়ের দোয়া তো জান্নাতের দরজা খুলে দিতে পারে। তাই সন্তানদের উচিত সবসময় পিতা-মাতার সন্তুষ্টি অর্জন করা।
মুসাফিরের দোয়া
মুসাফির যখন নিঃসঙ্গ হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে দোয়া করে, তখন তার দোয়া দ্রুত কবুল হয়। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার ও মুসাফিরের দোয়া কখনো ফেরত দেওয়া হয় না।(সুনানুত তিরমিজি: ৩৫৯৮)
আরও পড়ুন: এবার নষ্ট মোবাইল দান করার সুযোগ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে
মজলুমের দোয়া
জুলুম সহ্যকারী মানুষের আর্তনাদ সরাসরি আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সতর্ক করে বলেছেন,
واتق دعوة المظلوم، فإنها ليس بينها وبين الله حجاب মজলুমের দোয়া থেকে সাবধান থাকো; তার দোয়া ও আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা নেই। (সহিহ বুখারি: ২৪৪৮, সহিহ মুসলিম: ১৯১০) অতএব, কারো ওপর অন্যায় করা শুধু অন্যায় নয়, নিজের বিপদের কারণও হতে পারে।
রোজাদারের দোয়া
রোজা মানুষকে আত্মসংযম শেখায়, আর রোজাদারের দোয়া অত্যন্ত মূল্যবান। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
রোজাদারের ইফতারের সময় এমন একটি দোয়া থাকে যা প্রত্যাখ্যাত হয় না।(সুনানু ইবনি মাজাহ: ১৭৫৩) ইফতারের ঠিক আগের মুহূর্ত হলো দোয়া কবুলের এক বিশেষ সময়।
রাত্রির শেষ প্রহরে দোয়া করা বান্দা
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। (সুরা জারিয়াত:১৮) রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রাতের শেষ ভাগে আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করে বলেন, কেউ কি আছে আমাকে ডাকবে, আমি তার দোয়া কবুল করব? ( সহিহ বুখারি: ১১৪৫, সহিহ মুসলিম: ৭৫৮) এই সময়টিই দোয়া কবুলের সর্বোত্তম মুহূর্ত।
ন্যায়পরায়ণ শাসক
ন্যায়পরায়ণ শাসক আল্লাহর প্রিয় বান্দা। তার দোয়া আল্লাহ দ্রুত কবুল করেন। ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। ( সুনানুত তিরমিজি: ৩৫৯৮) কারণ সে আল্লাহর জমিনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।
সন্তানের জন্য মায়ের দোয়া
মায়ের দোয়া পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র দোয়া। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিনজনের দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় না,ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার, ও সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া। (সুনানুত তিরমিজি: ১৯০৫) الجنة تحت أقدام الأمهات জান্নাত মায়েদের পদতলে। (সুনানুন নাসায়:৩১০৪)
বিপদগ্রস্ত ও অসহায় ব্যক্তির দোয়া
আল্লাহ তাআলা বলেন, أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ কে সেই সত্তা, যিনি বিপদগ্রস্তের দোয়া কবুল করেন, যখন সে তাকে ডাকে? (সুরা নামল:৬২) যে হৃদয় থেকে আর্তনাদ উঠে আসে, তা সরাসরি পৌঁছে যায় আরশের মালিকের কাছে।
দোয়া হচ্ছে ঈমানের প্রকাশ, ভালোবাসার চিহ্ন, এবং আল্লাহর রহমত লাভের সোপান। দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হলো , ১.হালাল উপার্জন,২. আন্তরিকতা ও বিনয়, ৩.এবং কবুলের দৃঢ় বিশ্বাস।
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ادعوا الله وأنتم موقنون بالإجابة তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করো, এই বিশ্বাস নিয়ে যে তিনি তা কবুল করবেন। (সুনানুত তিরমিজি:৩৪৭৯) যার হৃদয়ে আল্লাহর ভয় আছে, যে আল্লাহর দরবারে বিনীতভাবে হাত তোলে,তার দোয়া কোনো দিনই বিফল হয় না। কবুলের সময় হয়তো দেরি হয়, কিন্তু আল্লাহর রহমত কখনো বিলম্বিত হয় না।
]]>

২ সপ্তাহ আগে
৪






Bengali (BD) ·
English (US) ·