বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৯ ও ২১ ব্যাটালিয়ন এবং পুলিশ সদস্যদের তৎপরতায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৮ মাস ১২ দিনে ২৩ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৭ কেজি ৪৩৪ গ্রাম স্বর্ণবার আটক করা হয়েছে। এসময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জন চোরাকারবারিকে।
তবে এখানেই শেষ নয়। সীমান্ত সূত্র জানায়- ঢাকা, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে করে আসা স্বর্ণের চালান পরে বাস বা ট্রেনে করে যশোরে পৌঁছায়। এরপর হাতবদল হয়ে তা বেনাপোল, চৌগাছা ও সাতক্ষীরা সীমান্ত হয়ে ভারতে পাচার করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছে একটি দেশি-বিদেশি শক্তিশালী পাচারকারী চক্র।
চোরাকারবারিরা কৌশল পরিবর্তন করে এখন বৈধ পথে- যেমন পণ্যবাহী ট্রাক, পাসপোর্টধারী যাত্রী এবং আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়ার আড়ালে স্বর্ণ পাচারে মনোযোগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে দুই দেশের কিছু ট্রাকচালক ও পাসপোর্টধারীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, আগে অবৈধ পথে বেশি চোরাচালান হলেও এখন বৈধ পন্থায়ই বেশি স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড কঠোর নজরদারির আওতায় আনার দাবি জানান।
স্থানীয় সীমান্তবাসী রুবেল হোসেন জানান, 'সীমান্তে স্বর্ণ পাচার বেড়ে যাওয়ায় অপরাধীদের আনাগোনা বেড়েছে। এতে আমাদের সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।'
আরও পড়ুন: যশোরে ৩ কোটি টাকার স্বর্ণেরবারসহ যুবক আটক
মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস যশোর’-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, “দুর্গাপূজার আগে স্বর্ণপাচার বেড়ে যায়। পাচার হয়ে যাওয়া স্বর্ণের বিনিময়ে দেশে আসছে মাদকসহ নানা নেশাজাত দ্রব্য। মাঝে মধ্যে কেবল বাহকরা ধরা পড়লেও মূল হোতারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের ধরতে প্রশাসনের আরও আন্তরিকতা প্রয়োজন।
৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, 'স্বর্ণ পাচার প্রতিরোধসহ যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে বিজিবি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে।' তিনি জানান, চলতি বছরের ৮ মাস ১২ দিনে ১৭ কেজি ৪৩৪ গ্রাম স্বর্ণ এবং ১৮ জন চোরাকারবারি আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি স্বর্ণ পাচারের মূল হোতাদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।'