বিশেষ কায়দায় মাদক পাচারের সময় হাতেনাতে ধরলো র‍্যাব

৬ ঘন্টা আগে
আগেই গোপন সংবাদ ছিলো। কিন্তু গাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজেও মিললো না মাদক। তলব করা হলো ডগস্কোয়াডকে। প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াডের সাহায্যে মাদকের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও গাড়ির কোথায় রাখা আছে, তা বের করতে র‍্যাবের পুরো টিমকে গলদঘর্ম হতে হয়। অবশেষে বিশেষ একটি চেম্বারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ফেন্সিডিল।

র‌্যাব জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একটি এক্স নোয়া গাড়ি আটক করা হয়। ডগ স্কোয়াড আসার পরও প্রথমে মাদক খুঁজে পায়নি, তবে পেছনের সিলিন্ডারের কাছে মাদক থাকার ইঙ্গিত দেয়। র‌্যাবের টিমও তল্লাশি করছিল, কিন্তু কিছু মিলছিল না। অবশেষে পায়ের ব্রেকের পাশে একটি গোপন সুইচের সন্ধান মেলে। সেটি চাপতেই যেন কোচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। খুলে যায় গ্যাস সিলিন্ডারের নিচ থেকে একটি বিশেষ চেম্বার। সেই চেম্বারের ভেতরে থরে থরে সাজানো অবস্থায় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। চেম্বারটি গাড়ির বাম পাশের দরজার হাইড্রলিক সুইচের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, যা অত্যন্ত অভিনব কায়দায় স্থাপন করা হয়েছিল।

 

র‌্যাব-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার হোসাইন বলেন, কুকুরের প্রদর্শিত লক্ষণ দেখে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হই যে, গাড়িতে ড্রাগস আছে। অনেক চেষ্টা করার পর আমরা নতুন একটি বিষয় লক্ষ্য করি। গাড়ির একটি হাইড্রোলিক কম্পোনেন্টে বিশেষভাবে অ্যাড করা হয়েছিল। বিশেষ করে টয়োটার আধুনিক নোয়া গাড়িগুলোতে দরজাগুলো হাইড্রলিক সিস্টেমে খোলে। কিন্তু এই গাড়িটি এমন নয়, দরজাগুলোতে হাইড্রলিক সিস্টেম ছিল না।

 

আরও পড়ুন: গ্যাস সিলিন্ডারে লুকানো ১০ কেজি গাঁজাসহ মাদককারবারি শাহিন আটক

 

পরে আমরা দেখেছি তারা গোপন চেম্বারটি খুলতে দরজার হাইড্রলিক সিস্টেম ব্যবহার করেছে। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে গোপন সুইচটি পাই। সেই সুইচে ক্লিক করলে দেখা যায় গ্যাস সিলিন্ডারের নিচ থেকে একটি কম্পার্টমেন্ট অটোমেটিক্যালি হাইড্রোলিকভাবে চালিত হয়ে খুলে গেছে।

 

অভিযানে র‍্যাব হাবিবুর রহমান ও মো. পলাশ নামের দুই মাদক কারবারিকে আটক করে। র‌্যাব বলছে, এরা ফেনসিডিলের বড় সিন্ডিকেটের সদস্য। ভারত থেকে কখনো দিনাজপুর, কখনো কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল ঢাকায় আনে। পরে সেই ফেনসিডিল ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় সরবরাহ করে। ভারত থেকে ১৮০-২০০ টাকায় ফেন্সিডিল কিনে ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।

 

মো. সারোয়ার হোসাইন বলেছেন, ফেন্সিডিলের বেশিরভাগ চালান সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ঢোকে। সবচেয়ে বড় বাজার হল ঢাকা ও আশপাশের উপনগরগুলো; সেখানেই বেশি চাহিদা থাকে। পাচারকারীরা ঢাকা পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বেশ স্বস্তিতে চলে আসে। ঢাকায় ঢোকার পরে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে রুট বদল করে, মাঝপথে অযৌক্তিকভাবে গাড়ি ঘোরায় যাতে তাদের গতিপথ শনাক্ত করা কঠিন হয়। এভাবেই তারা মাদক পৌঁছে দেয়।

 

ফেনসিডিল পাচারকারী এই চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযানে চলবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন