যশোর জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান

৩ সপ্তাহ আগে
যশোর জেনারেল হাসপাতালে অতর্কিত অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোরের সমন্বিত কার্যালয়ের তদন্ত দল। এসময় তিরা খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা পর্যন্ত নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। হাসপাতালের সেবা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতেই আজ রবিবার দুপুরে এ অভিযান চালায় দুদক।

যশোরের সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ আল-আমিনের নেতৃত্বে একটি দল হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ওয়াশরুম, রোগীদের দেওয়া খাবার, ওষুধের স্টোর রুম, প্যাথলজি বিভাগ ঘুরে দেখছেন। এ সময় তারা হাসপাতালের বিভিন্ন নথিপত্রও খতিয়ে দেখছেন।
 

অভিযানের শুরুতেই দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালের রান্নাঘরে গিয়ে রোগীদের খাবারের মান পরীক্ষা করেন। সেখানে দেখা যায় ২০০ গ্রাম ভাত দেওয়ার কথা থাকলেও রোগীদের দেওয়া হচ্ছে কম। সকালের নাস্তার পাউরুটির পরিমাণ ঠিক নেই। ডিমের আকারে ছোট। খাবারের লবণ, পেঁয়াজ ও রসুনের মান নিম্নমানের, চিকন চালের পরিবর্তে মোটা চাল দেওয়া হচ্ছে। ডালও নিম্নমানের। ৮০ গ্রাম মাছ দেওয়া হলেও দেওয়া হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ গ্রাম। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, এই ধরনের নিম্নমানের খাবার নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠিয়ে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, দুদকের মামলা

অভিযানের সময় দুদক কর্মকর্তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখতে পান ১৬০ পিস ডায়রিয়ার স্যালাইন মজুদ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরের দোকান থেকে স্যালাইন কিনতে বলা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে চাইলে ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স জানান, উপরে থেকে নির্দেশনা আছে। এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং উক্ত নার্সকে শোকজ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
 

অভিযানে প্রাথমিক চিকিৎসার কক্ষে যেয়ে দুদকের কর্মকর্তরা দেখেন, সেখানে কাজ করা ব্যক্তিদের কেউই হাসপাতালের অনুমোদিত বা কার্ডধারী কর্মী নন। তবু তারা রোগীদের ব্যান্ডেজ, প্লাস্টার করে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করছেন। দুদক কর্মকর্তারা এই ধরনের অবৈধ অর্থ আদায় বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
 

অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হোসাইন শাফায়াতের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তারা তত্ত্বাবধায়ককে অনিয়মগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান। একই সাথে বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখেন।
 

এদিকে দুদকের এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে রোগী, তাদের স্বজন ও স্থানীয় সচেতন মহল।
 

আরও পড়ুন: খুলনার শিপইয়ার্ড সড়ক প্রকল্পে অনিয়ম অনুসন্ধানে দুদকের অভিযান

যশোরের সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ আল-আমিন  বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে আজকের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা অবাক হয়েছি, হাসপাতালে রোগীদের যে ধরনের চাল ডাল, তেলসহ রান্না সামগ্রী ব্যবহার করে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে সেটা অত্যন্ত নিম্নমানের। স্টোর রুমে ওষুধ থাকলেও অনেক ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে রোগীদের। অনিয়মের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করবে দুদক।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন