সোমবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে কালকিনি উপজেলার ‘কালাই সরদারের চর’ এলাকায় এই অভিযান চালায়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রাম দা ও ব্যাগভর্তি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে ফয়সালকে গ্রেফতার করে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেফতার মোট আসামিরা হলেন: কালকিনি উপজেলার কালাই সরদারের চর গ্রামের বজলু তালুকদারের ছেলে ফয়সাল তালুকদার (৩০), একই এলাকার লুৎফর তালুকদারে ছেলে রবিউল তালুকদার (২০), গিয়াস উদ্দিন তালুকদারের ছেলে অমিত তালুকদার (২২), দাদন তালুকদারের ছেলে সম্রাট তালুকদার (১৯), শিকারমঙ্গল মৃধাকান্দি গ্রামের আলি আকবর মৃধার ছেলে বেলায়েত মৃধা (৪৮) ও আউলিয়ারচর গ্রামের কাঞ্চন বেপারীর ছেলে মাহবুব আলম ওরফে মুকুল বেপারী (৪৫)।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আকতার শিকদারের বিরোধ চলে আসছিল। এই নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার মামলায় দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিল আকতার শিকদারের পরিবার।
আরও পড়ুন: ইউপি চেয়ারম্যান সুমনের নির্দেশেই কালকিনিতে ট্রিপল মার্ডার: পুলিশ
নিজ বসতঘরে আগুন লাগার খবরে লোকজন নিয়ে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে এলাকায় আসেন ইউপি সদস্য ও তার ছেলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্তারের ওপর হামলা চালায়। বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কুপিয়ে হত্যা করা হয় তিনবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ শিকদারকে। এতে আহত হয় আরও ৬ জন। আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় বিভিন্ন হাসপাতালে। তাদের মধ্যে সিরাজ চৌকিদার নামে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানী ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান তিনি। এই ঘটনায় নিহত আক্তার শিকদারের বাবা মতিউর রহমান বাদী হয়ে ৬৫ জনের নামে একটি মামলা করেন এবং নিহত সিরাজের বাবা রশিদ চৌকিদার ৩৪ জনের নামে আরেকটি মামলা করেন। দুটি মামলা কালকিনি থানায় রেকর্ড করা হয়।
এতে প্রধান আসামি করা হয় বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও তার ভাই মশিউর রহমান রাজনকে। এই মামলায় বিভিন্ন স্থান থেকে এখন পর্যন্ত মামলায় এজাহারনামীয় ৬ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।