মাঠেই পাঠশালা: আধুনিক কৃষিতে দক্ষ হচ্ছেন খানসামার কৃষকেরা

৩ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের পাকেরহাট এলাকায় কৃষকের উঠানে পলিথিন শিট বিছিয়ে চলছে ব্যতিক্রমধর্মী কৃষি শিক্ষা কার্যক্রম। ২৫ জন কৃষক-কৃষাণী মনোযোগ সহকারে অংশ নিচ্ছেন একটি 'পার্টনার মাঠ স্কুল'-এর ক্লাসে, যেখানে হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে মৌসুমভিত্তিক নির্দিষ্ট ফসলের আধুনিক চাষাবাদ ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি।

রোপা আমন ধানকে কেন্দ্র করে এই মাঠ স্কুলে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। মাঠেই বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোগ-পোকামাকড়ের সাথে, এবং তা দমনে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ব্যবহার শেখানো হচ্ছে। নির্বিচার বালাইনাশক না ব্যবহার করে কীভাবে নিরাপদ ও টেকসই কৃষি সম্ভব, সেটাই মূল বার্তা এই প্রশিক্ষণের।


ক্লাস পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার ইয়াসমিন আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাসিব আহমেদ খান, মো. আল-মুক্তাদির, এবং উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও মমিনুল বিন আমিন।


‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রকল্পের আওতায় খানসামা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে গত রবি মৌসুমে মোট ২৭টি মাঠ স্কুলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের আওতায় ছিল ধান, গম, সরিষা, ডাল, নিরাপদ সবজি ও ফল চাষের আধুনিক পদ্ধতি এবং উত্তম কৃষি চর্চা। চলতি মৌসুমে একটি স্কুলের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রতিটি মাঠ স্কুলে মোট ১০টি পাঠে কৃষকদের তিন ঘণ্টাব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সপ্তাহে একদিন করে।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, কৃষকদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে প্রতিদিন একজন কৃষককে দলনেতা করে পাঠদান পরিচালনা করা হয়। নাট্যভঙ্গি, দলীয় কার্যক্রম ও অংশগ্রহণমূলক কৌশল অনুসরণ করায় ক্লাসগুলো হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। কৃষকেরা নিজেরাই উৎসাহিত হয়ে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।


আরও পড়ুন: দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও সার পেলেন না কৃষকরা, তালা মেরে উধাও ডিলার


পাকেরহাট এলাকার কৃষক হাফিজুল ইসলাম, আতিয়ারন রহমান, চৈতি রায় ও বিলকিস বেগম জানান, সময়ের সঙ্গে চাষাবাদ পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাই পার্টনার স্কুলের ক্লাসে অংশ নিয়ে তারা আধুনিক ও কার্যকর চাষাবাদ পদ্ধতি শিখছেন, যা তাদের চাষে সরাসরি কাজে লাগছে।


উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা যদুনাথ রায় বলেন, 'ফসলের আধুনিক জাত নির্বাচন থেকে শুরু করে নিরাপদ উপায়ে অধিক ফলন নিশ্চিত করার কারিগরি জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে মাঠ স্কুলগুলোতে। এতে কৃষকরা আধুনিক কৃষি সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পাচ্ছেন এবং আগ্রহী হচ্ছেন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন