বিবিসি বাংলাকে দেয়া তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে। এতে তারেক রহমান বিএনপির রাজনীতির পরিবর্তন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, সংস্কার নিয়ে কথা বলেছেন।
পাঁচই আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং সেখানে আছেন। ভারতের সাথে একটা সম্পর্কের শীতলতা দেখা গেছে, গত এক বছর ধরে। যেমন যাওয়া আসার ক্ষেত্রে, ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা রকম। সেই ক্ষেত্রে কী কোনো পরিবর্তন আপনারা সরকারে আসলে উদ্যোগ নেবেন, এমন কোনো চিন্তা আছে কিনা?
জবাবে তারেক রহমান বলেন, এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয় সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সাথে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সাথে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: যত দ্রুত নির্বাচন হবে, তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা আসবে: তারেক রহমান
বিএনপি যদি সরকার গঠন করে তবে কূটনীতির ক্ষেত্রে মূলনীতি কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুড কোশ্চেন। বিএনপির মূলনীতি একটাই- সবার আগে বাংলাদেশ। কূটনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির নীতি সবার আগে বাংলাদেশ, আমার জনগণ, আমার দেশ, আমার সার্বভৌমত্ব। এটিকে অক্ষুণ্ন রেখে বাকি সবকিছু।
এটাকে বৈশ্বিক রাজনীতির একটা প্রভাব বলা যায়? কারণ আপনি যদি বিভিন্ন দেশে দেখেন, এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পও আমেরিকা ফার্স্ট একটা স্লোগান দিয়ে কিন্তু এসেছিলেন?
এমন প্রশ্নে তারেক বলেন, না, ওদেরটা ওরা বলেছে, আমি ভাই বাংলাদেশি। আমার কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ বড়। আমার কাছে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ বড়। আমার কাছে সবার আগে বাংলাদেশ। সিম্পল, কমপ্লিকেট করার কিছু নাই, এটা সিম্পল ব্যাপার।
বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে যেই সম্পর্ক ছিল সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। তো ভারতের সম্পর্কে আপনাদের নীতি কী হবে-ভারতের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে?
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে যা বললেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির
এ বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, আমার মনে হয় আপনি একটু আগে যে প্রশ্নগুলো করেছেন সেখানে বোধ হয় আমি ক্লিয়ার করেছি পুরো ব্যাপারটা। সবার আগে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখানে তো আপনি পার্টিকুলার একটি দেশের কথা বলেছেন। এখানে ওই দেশ বা অন্য দেশ তো বিষয় না। বিষয় তো হচ্ছে ভাই বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ, আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে তারপরে আমি যা যা করতে পারব আমি তাই করব।
বাংলাদেশের স্বার্থ আপনারা সবার আগে নেবেন সেটা আপনি পরিষ্কার করেছেন। ভারতের কথা বিশেষভাবে আসছে যেহেতু সেটি বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের তিন পাশেই এই দেশটির সীমান্ত রয়েছে। এবং এটি নিয়ে আপনিও জানেন যে বিভিন্ন সময়ে কথা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় তো সম্পর্ক নিয়ে বললামই সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত বা কেমন থাকা প্রয়োজন সেটা নিয়ে আপনার চিন্তা কী?
তারেক রহমান বলেন, অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাই না যে আরেক ফেলানি ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নেব না।
বাংলাদেশের স্বার্থের প্রসঙ্গে আপনি চাচ্ছেন যে পানির হিস্যা চাওয়া এবং সীমান্ত হত্যার বিষয়টি নিয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন?
এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, না না, আমি উদাহরণ দিয়ে বললাম। দুটো উদাহরণ দিয়ে বুঝালাম আপনাকে, যে আমাদের স্ট্যান্ডটা কী হবে। আমরা আমাদের পানির হিস্যা চাই। অর্থাৎ আমার দেশের হিস্যা, মানুষের হিস্যা আমি চাই, হিসাব আমি চাই। আমার যেটা ন্যায্য সেটা আমি চাই। অবশ্যই ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমি বুঝাতে চেয়েছি যে, আমার মানুষের উপরে আঘাত আসলে অবশ্যই সেই আঘাতকে এভাবে আমি মেনে নেব না।