চলতি বছরের ২৯ মে ১৪ টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এরমধ্যে অর্থ ও হিসাব শাখার সহকারী পরিচালক পদের যোগ্যতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসির আইন অমান্য করে যোগ্যতা শিথিলের।
নিয়ম অনুযায়ী, সহকারী পরিচালকসহ ৭ম গ্রেডের কোন পদে নিয়োগের জন্য নবম গ্রেডের কোন পদে অবশ্যই ন্যূনতম ৪ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে সহকারী পরিচালক, অর্থ ও হিসাব পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (৯ম গ্রেড) হিসেবে ৫ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত দেয়া থাকলেও এবারে শুধুমাত্র ৭ম গ্রেডের এ পদের জন্য অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কাজে ৪ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বেরোবির সব পরীক্ষা স্থগিত
১৩ এপ্রিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১১তম সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন পদ সমূহের (কর্মকর্তা-কর্মচারী ) জনবল নিয়োগের নিমিত্তে নিয়োগের শর্তাবলী নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাপ্তপত্রে (পত্র নং - ৩৭. ০১. ০০০০. ০০০. ১৫২. ১১. ০০২৩. ২০. ৫০ তারিখ ০২ মার্চ ২০২৫) উল্লিখিত নির্দেশনা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩ তম সিন্ডিকেটের এ সংক্রান্ত অনুমোদিত শর্তাবলী এবং ইতিপূর্বে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সমূহের শর্তাবলী বিবেচনায় নিয়ে ইউজিসি থেকে প্রাপ্ত পদ সমূহের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে ২৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৩ তম সিন্ডিকেটে সিদ্বান্ত হয় গত ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১১১তম সভার কার্যবিবরণীতে বর্ণিত সিদ্ধান্ত(০৭) নিশ্চিতকরণ কালে উক্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সিন্ডিকেটে এই অভিমত উঠে আসে যে, ৯ম গ্রেডের ঊর্ধ্ব পদ সমূহে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে অনেক যোগ্য প্রার্থী যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে ও জাতীয় বেতন স্কেলে চাকরি করেন নাই কিন্তু স্ব-স্ব ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও কর্ম অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে আবেদন করতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় অধিক সংখ্যক যোগ্য প্রার্থীর আবেদন করার সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় চাকরির ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে সরকারি /স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে/ বিষয়ে চাকরির অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সম্পন্ন প্রার্থীগণ আবেদন করতে পারবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এটি পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউজিসির আইন পরিপন্থী। তারা বলেন নিজেদের পছন্দসই প্রার্থীকে সুযোগ দিতেই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, নিয়ম শিথিল করার ফলে অনেক ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এমন ব্যক্তিরাও আবেদনের সুযোগ পাবেন, কারণ সব প্রতিষ্ঠানেই সরকারি অনুমোদন নিয়েই পরিচালিত হয় । এটি এক ধরনের অনিয়ম বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ছাড়কৃত জনবল নিয়োগের শর্তাবলির মধ্যে বলা আছে, জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও কমিশনের নির্দেশনা অবশ্য পালনীয়। ন্যূনতম চাকরির অভিজ্ঞতা কোনোক্রমেই শিথিল করা যাবে না।
আরও পড়ুন: বেরোবির প্রথম সমাবর্তন ২০ ডিসেম্বর
এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য ড. শওকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অধিক সংখ্যক যোগ্য প্রার্থী যাতে আবেদন করতে পারেন সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত। উপাচার্য বলেন, আবেদন উন্মুক্ত করনের মধ্য দিয়ে অধিক সংখ্যক যোগ্য প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন। আমাদের এমন সিদ্ধান্তকে ইউজিসির সাধুবাদ জানানো উচিত।
তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক, মোহাম্মদ জামিলুর রহমান বলেন, ৭ম গ্রেডের কোন পদে চাকরি করতে হলে তাকে অবশ্যই নবম গ্রেডে চাকরি করতেই হবে। এছাড়া ৭ম গ্রেডে চাকরির কোনো সুযোগ নেই।
]]>