বুয়েট শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা ছবি নিয়ে ডিএমপির ফটোকার্ড ফেসবুক থেকে ডিলিট

১ সপ্তাহে আগে
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় পুলিশি অ্যাকশনের আলোচিত ছবি সম্বলিত পোস্টটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর ফেসবুক পেজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

ডিএমপি নিউজের তৈরি ফটোকার্ডটি ডিএমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছিলো। ওই ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছিল, রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলমকে নিয়ে আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।


এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলমকে নিয়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এক ছাত্রের মুখ চেপে ধরার একটি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ডিএমপির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত ছবিটি তৈরি করে জনমনে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায়, তা সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।
 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির উদ্দেশ্যে তৈরি ছবি ও তা প্রচারের সঙ্গে জড়িতদের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায় ডিএমপি। একইসঙ্গে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হয়।

 

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ওপর বলপ্রয়োগ: তদন্তে ডিএমপির ৩ সদস্যের কমিটি
 

তবে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার মেটা ডাটা যাচাই করে জানায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি নয়, ছবিটি আসল।


ফেসবুকে অনেকে ডিএমপির পোস্টের সমালোচনা করেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে বলেন, পোস্টটা ইতোমধ্যে ডিলিট করেছে ডিএমপি। তবে আশা করি, ডিএমপি দিনে দুপুরে এরকমের মিথ্যাচার কেন করল তা ব্যাখ্যা করে জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর ডিসি মাসুদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে এই আন্দোলন থামবে না। আমাদের উপদেষ্টাদের উচিত সরাসরি হস্তক্ষেপ করা। যেকোনো আন্দোলনই বেশিদিন চললে অনেকেই বাম হাত ঢুকানোর চেষ্টা করে।


ফাইয়াজ তার পোস্টে ডিএমপির ফেসবুক পোস্টের যে স্ক্রিনশট যুক্ত করেন তাতে বুঝা যায়, থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকে মিথ্যা তথ্যের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ফেসবুক ফটোকার্ডটি আর দেখাচ্ছে না।

 

 

এদিকে ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের বল প্রয়োগের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক অফিস আদেশে জানানো হয়, কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী। সদস্য হিসেবে আছেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) সুফিয়ান আহমেদ এবং সদস্য সচিব হিসেবে উপপুলিশ কমিশনার (অর্থ) সাদেক আহমেদ।

 

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: বুয়েট ভিসি


অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বুধবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হয়ে দাবি আদায়ের কর্মসূচি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে যাত্রা করলে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রমের চেষ্টা করলে পুলিশ বলপ্রয়োগ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে।


ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পুলিশের বলপ্রয়োগের কার্যকারণ ও মাত্রার যথার্থতা নিরূপণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে মতামতসহ প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন