বিশ্বকাপে খেলার দ্বারপ্রান্তে রোনালদোর পূর্বপুরুষের দেশ

১ দিন আগে
এখন পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বকাপ খেলা সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ আইসল্যান্ড। ২০১৮ সালে যখন নর্ডিক রাষ্ট্রটি বিশ্বকাপ খেলে তাদের জনসংখ্যা মাত্র ৩৩৭,৬৬৯ জন। নিজেদের গ্রুপ ডি'র তলানিতে থেকে সে বিশ্বকাপ শেষ করেছিল আইসল্যান্ড। সেন্ট্রাল আটলান্টিক সাগরে পশ্চিম আফ্রিকান দেশ কেপ ভার্দে আইসল্যান্ডের চেয়ে খুব বেশি জনবহুল নয়। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৫২৪,৮৭৭ জন। এতো কম জনসংখ্যার দেশটিকেই আগামী বছর হয়ত বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যেতে পারে।

কেপ ভার্দে দেশটাকে খুব বেশি মানুষের চেনার কথা নয়। ফুটবল বিশ্বে তেমন নামডাকও নেই আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্রটির। তবে বিখ্যাত এক ফুটবলারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশটির নাম। পর্তুগালের মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ধমনিতে কিঞ্চিৎ পরিমানে বইছে কেপ ভার্দের উত্তরাধিকার। রোনালদোর বাবা জোসে দিনিস অ্যাভেইরোর দাদি ইসাবেল দা পিয়েদাদে পর্তুগালে এসেছিলেন এই দ্বীপরাষ্ট্র থেকেই। পর্তুগালের আরেক বিখ্যাত ফুটবলার ন্যানির পরিবারও পর্তুগালে এসেছিল কেপ ভার্দে থেকেই।


আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা ও মেক্সিকোয় যে বিশ্বকাপের আসর বসছে সেখানে হয়ত পূর্বপুরুষের জন্মভূমির বিপক্ষেই খেলতে নামতে হতে পারে রোনালদোকে। সে সম্ভাবনা কিছুটা হলেও আছে। আফ্রিকার স্বল্প পরিচিত দ্বীপরাষ্ট্রটি যে বিশ্বকাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। রোনালদোর পর্তুগালও খুব বড় কোনো অঘটন না ঘটলে বিশ্বকাপে খেলছে বলাই যায়। মূল পর্বের ড্রয়ে কেপ ভার্দে আর পর্তুগাল এক গ্রুপে পড়লেই তো এই কল্পিত চিত্র বাস্তবে পরিণত হয়ে যাবে!


আরও পড়ুন: বলে লাথিও মারতে পারছেন না কেইন


দীর্ঘদিন থেকে ৩২ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজিত হলেও এবারের আসরে দল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮টি। আর তাতেই কপাল খুলেছে কেপ ভার্দের। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে এতোদিন পাঁচটি দেশ সরাসরি বিশ্বকাপে সুযোগ পেলেও এবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয়ে। আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাই পর্বে তা গ্রুপ করা হয়েছে নয়টি। এই নয় গ্রুপের প্রত্যেকটির গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। আফ্রিকা থেকে মরক্কো, তিউনেশিয়া ও মিশর এরই মধ্যে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করে ফেলেছে। পরের নামটাই হতে পারে কেপ ভার্দের।


গ্রুপ ডি'তে এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে কেপ ভার্দে। গতকাল (৮ অক্টোবর) নবম ম্যাচে লিবিয়ার সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে তারা। ৯ ম্যাচে ৬ জয় ও ২ ড্রয়ে ২০ পয়েন্ট কেপ ভার্দের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্যামেরুনের সমান ম্যাচে অর্জন ১৮ পয়েন্ট। শেষ ম্যাচে গ্রুপের একদম তলানিতে থাকা এসওয়াতিনির বিপক্ষে জয় পেলেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে কেপ ভার্দে। সে ক্ষেত্রে তারা হবে আইসল্যান্ডের পর জনসংখ্যায় দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ, যারা ফুটবল বিশ্বকাপে খেলেছে।


আরও পড়ুন: হংকংয়ের বিপক্ষে কেন জিততেই হবে বাংলাদেশকে?


কেপ ভার্দের এই উত্থান রীতিমতো বিস্ময়কর। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭০ নম্বরে থাকা শার্করা ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে খেলার সুযোগ পায়। এরপর থেকে ডায়াসপোরা ফুটবলারদের কাজে লাগিয়ে তরতর করে ওপরে উঠছে কেপ ভার্দে। এখন তো বিশ্বকাপের টিকিট হাতছোঁয়া দূরত্বে।


কেপ ভার্দের সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে আফ্রিকাকে সবচেয়ে বেশিবার প্রতিনিধিত্ব করা ক্যামেরুন। শার্করা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা মানেই আফ্রিকার অদম্য সিংহদের কপাল পোড়ার শঙ্কা। আপাতত শেষ ম্যাচে অ্যাঙ্গোলাকে হারানোর পাশাপাশি কামনা করতে হবে কেপ ভার্দে যেন শেষ ম্যাচে এসওয়াতিনির বিপক্ষে জয় না পায়। কিন্তু এই সমীকরণ না মিললেই বিপদ গত বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে হারানো ক্যামেরুনের। সে ক্ষেত্রে লড়াই করতে হবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে জায়গা করে নেয়ার।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন