বাংলাদেশে আসছেন মালা আলি কুর্দিস্তানি!

১ সপ্তাহে আগে
বাংলাদেশ সফরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত ব্যক্তিত্ব মালা আলি কুর্দিস্তানি। বুধবার (২৭ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক বার্তায় এ ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, প্রিয় বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা শেয়ার করতে পেরে আনন্দিত যে খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল উদ্বোধন করতে আমি বাংলাদেশ সফর করব। সফরটি হবে ঐতিহাসিক।

 

বার্তায় তিনি আরও বলেন, আমার লক্ষ্য হলো এই পবিত্র বিজ্ঞান ১ হাজার শিক্ষার্থীকে শেখানো এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়া। সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে আমি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য ২৫০ ধরণের ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ ও ভেষজ ওষুধ তৈরি করেছি। আমার বিশ্বাস এই প্রচেষ্টা শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয় বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে। কারণ তখন সারা বিশ্ব থেকে-বিশেষ করে আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে-মানুষ চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে আসবে।

 

তিনি আরও লেখেন, আমার জীবনের লক্ষ্য হলো  শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গরিব মানুষের সেবা করা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন ইসলামি দেশগুলোতে।

 

কে এই মালা আলি কুর্দিস্তানি?

মালা আলি কুর্দিস্তানি ইরাকের কুর্দিস্তানের মানুষ। নিজের ফেসবুক পেজটির নাম দিয়েছেন ‘মালা আলি কুর্দিস্তানি’। এই নামেই তিনি পরিচিত। তবে পেজের ইন্ট্রোতে বলেছেন, ‘আমার নাম ড. আলি মাহমুদ হাসান। আমি ২৮ বছর ধরে ভেষজ চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ।’

 

কুর্দিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তার আসল নাম মোল্লাহ আলি কালাক। ফেসবুকে তার ফলোয়ার ৫৮ লাখের বেশি। ভার্চুয়াল দুনিয়ার বাইরে বাস্তব জগতেও তার হাজার হাজার অনুসারী রয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কের মুখে আছেন তিনি। কারণ তার প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে দাবি করা হয়, তিনি কোরআনের আয়াত ব্যবহার করে অসুস্থ, জ্বিনে আক্রান্ত এবং অক্ষম মানুষদের সুস্থ করে তোলেন।

 

আরও পড়ুন: এই লোকটি কি সত্যিই কোরআনের আয়াত পড়ে মানুষকে সুস্থ করে তুলছেন?

 

তার এই কর্মকাণ্ড শুরু হয় ইরাকের কুর্দিস্তান প্রদেশের ইরবিল শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে তার নিজ গ্রাম কালাক থেকে। সেখানে তিনি একটি হিলিং সেন্টার বা রোগ নিরাময় কেন্দ্র খোলেন। দাবি করা হয় তিনি ক্যান্সারের চিকিৎসাও করতে পারেন। এই চিকিৎসায় তিনি উটের মুত্রকে উটের দুধের সঙ্গে মিলিয়ে রোগীকে খাওয়াতেন। চিকিৎসার জন্য তিনি রোগীকে চাবুকও মারতেন। এসবের ভিডিও ভাইরালও হয়।


কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম রুদাউ ইংলিশ জানায়, সরকার বারবার তার নিরাময় কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছিল। তার বেআইনি চিকিৎসা কার্যক্রমের কারণে কর্মকর্তারা তাকে একাধিকবার গ্রেফতার করে ও আদালতে হাজিরার নোটিশ দিয়েছিলেন। এক নারীকে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগেও তাকে গ্রেফতার করা হয়।


যখন কুর্দিস্তানে তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ দায়ের হয় এবং সাজার সম্ভাবনা তৈরি হয় তখন তিনি সৌদি আরব চলে যান। তবে সেখানে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সৌদি পুলিশ তাকে আটক করেন। যদিও কিছুদিন পর তিনি মুক্তি পান। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে মালা আলি পাকিস্তানে যান।

 

তিনি দেশটির যেখানেই গেছেন সেখানেই হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। শুধু সাধারণ মানুষই নন, পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদরা এবং বেশ কয়েকজন ধর্মীয় নেতা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি তার সঙ্গে কোলাকুলি করেন এবং খুবই হৃদ্যতার সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশটির জাতীয় সংসদের স্পিকার আসাদ কায়সার মালা আলিকে পাকিস্তানি টুপি পরিয়ে স্বাগত জানান।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন