বনানীতে প্রকৌশলী রাসেলের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

৩ দিন আগে
রাজধানীর বনানীতে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রকৌশলী মু. আহসানুল রাসেলের ওপর সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে বনানীতে সন্ত্রাসী টোকাই অপু, কাইয়ূম, হাবলু ও মাসুম নামে চার ব্যক্তি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী রাসেলকে লক্ষ করে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।


ভুক্তভোগী রাসেল ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন অফ বাংলাদেশের (আইইবি) এডহক কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রকৌশলী রাসেল ঘটনার দিন বিকেল ৫টার দিকে আহ্বায়ক প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনকে শুভেচ্ছা জানাতে তার বনানী অফিসে যান। তবে তিনি নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে পৌঁছান। রাসেল অভিযোগ করেন, তিনি গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে উপস্থিত সন্ত্রাসী টোকাই অপু, কাইয়ূম, হাবলু ও মাসুম তাকে ঘিরে ফেলে। এ সময় সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়দানকারী অপু তার কলার ধরে টেনে নিয়ে যায় এবং আশপাশে থাকা ১৫–২০ জন বহিরাগতকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘মার ওরে!’ এরপর বাকি তিনজনও ‘ওরে মার’ বলে উসকানি দেয়।


পরবর্তীতে ভাড়াটে বাহিনী লাঠি-সোঁটা নিয়ে রাসেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি প্রাণভয়ে দৌড়ে পালাতে চাইলে, পেছন থেকে অপু লাথি মেরে তাকে ফেলে দেয়। এরপর প্রায় ১৫ মিনিট ধরে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। আহত রাসেল মাটিতে পড়ে গেলেও হামলাকারীরা থামেনি।


প্রকৌশলী রাসেলের দাবি, হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল তাকে হত্যা করা। তিনি বলেন, ‘আমি মাটিতে পড়ে ছিলাম, তবুও তারা থামেনি। তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি হয়তো আর বাঁচব না।’


ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও প্রকৌশলী শেখ শাহরুখ ফারহান, যিনি সহকর্মীকে উদ্ধার করতে গেলে নিজেও আঘাতপ্রাপ্ত হন।


আরও পড়ুন: সাংবাদিকের ওপর হামলা, আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ


তিনি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নিরীহ অবস্থায় উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ সন্ত্রাসী অপু ও তার সহযোগীরা আমার প্রতিও উস্কানিমূলক কথা বলে, কিল, লাথি ঘুষি মারে। এমনকি আমার মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। কিছুক্ষণ পরে তা ফেরত দেয়, কিন্তু আমি ততক্ষণে আহত।’


আহত প্রকৌশলী রাসেল জানান, তিনি বর্তমানে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা রয়েছে। তিনি এরইমধ্যে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।


এ বিষয়ে আহ্বায়ক প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে এবং অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ ও প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ পেলে হামলাকারীদের মুখ ও পুরো ঘটনা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।


স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্ত অপু নিজেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয়ে উপস্থাপন করে— কখনও সরকারি কর্মকর্তা, কখনও প্রকৌশলী, আবার কখনও রাজনৈতিক পরিচয়ে। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সম্প্রতি প্রকৌশলী সমাজে ভয়ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।


এ বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারোয়ার বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন