ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ফ্যাক্ট চেকিং কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা

৩ সপ্তাহ আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি মেটার প্লাটফর্মগুলোতে কনটেন্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আসছে। রক্ষণশীল রাজনীতিকদের সমালোচনার মুখে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডে ফ্যাক্ট চেকিং কর্মসূচি বাতিল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই সঙ্গে এখন থেকে অভিবাসন ও লিঙ্গ পরিচয়ের মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার ওপর যে কড়াকুড়ি তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মেটার এই পদক্ষেপ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডে রাজনৈতিক কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের সাথে মেটার চলমান দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার অভিপ্রায় স্পষ্ট করলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ।

 

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে জাকারবার্গ জানান, এখন থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ব্যাপারেই বেশি গুরুত্ব দেবেন। ফ্যাক্ট চেকারদের সরিয়ে সেখানে কমিউনিটি নোট নিয়ে আসবেন। নীতিগুলোকে আরও সরলীকরণ করবেন এবং ভুলভ্রান্তি কমিয়ে আনার ব্যাপারে নজর দেবেন।

 

মেটার প্রধান নির্বাহী আরও জানান, নীতিগত এই পরিবর্তনের ফলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডে এখন থেকে আরও বেশি রাজনৈতিক কনটেন্ট দেখা যাবে। অর্থাৎ এখন থেকে রাজনৈতিক কনটেন্ট বেশি বেশি সুপারিশ করবে মেটা।

 

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের খবর মানুষের কাছে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে ফেসবুক

 

ভিডিও পোস্টের শিরোনামে তিনি লিখেছেন, 

মুক্ত মতপ্রকাশের ব্যাপারে এখন আমাদের শিকড়ে ফেরার সময়। আমরা ফ্যাক্টচেকারদের পরিবর্তে এখন কমিউনিটি নোট ব্যবহার করব। আমাদের নীতিগুলোকে আরও সরলীকরণ করছি এবং ভুল কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি।

 

মেটা প্লাটফর্মগুলোতে কনটেন্ট প্রকাশে অতিরিক্তি কড়াকড়ি ও কঠোর ফ্যাক্ট চেকিং নীতির কারণে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে পড়ে মেটা। এ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরের সঙ্গে দ্বন্দ্বও অনেকদিনের। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাকারবার্গ। এরপরই তিনি মতপ্রকাশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার কথা বললেন।

 

খবরে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক কনটেন্ট প্রকাশের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি শুরু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করা ফ্যাক্টচেকারদের বাদ দিয়ে সেখানে কমিউনিটি নোটস ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন জাকারবার্গ। অর্থাৎ এখন থেকে এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর মতাতমতকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।

 

কমিউনিটি নোটস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (পূর্ব নাম টুইটার) একটি পরিচিত ফিচার। এক্সের মালিক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে নতুন সরকারেও জায়গা পাচ্ছেন। এক্সে বিতর্কিত পোস্টে সতর্কতা এবং প্রসঙ্গ যোগ করার বিষয়টি ব্যবহারকারীর ওপর নির্ভর করে।

 

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের অভিষেক তহবিলে ১০ লাখ ডলার দিলো মেটা

 

জাকারবার্গ ফ্যাক্টচেকারদের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ভিডিও পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, মেটার ফ্যাক্টচেকাররা রাজনৈতিকভাবে অনেক বেশি পক্ষপাতদুষ্ট থেকেছে। তারা আস্থা তৈরির বদলে অনেক বেশি নষ্ট করেছে। জাকারবার্গ বলেন, মেটার কেনটেন্ট সম্পাদনাকারী কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে টেক্সাসে সরিয়ে নেয়া হবে। সেখানে মেটার পক্ষপাত নিয়ে উদ্বেগ কিছুটা কম।

 

বিশ্বজুড়ে মেটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০০ কোটিরও বেশি। জাকারবার্গের বিবৃতিতে বলা হয়, অভিবাসন ও লিঙ্গের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে যেসব বিধিনিষেধ ছিল, সেগুলো থেকে মুক্তি পাবে মেটা। যেসব দেশের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের ওপর আরও বেশি সেন্সরশিপের জন্য চাপ দিচ্ছে, তাদের ওপর চাপ বাড়াতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করবে মেটা।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন