ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি জিআই স্বীকৃতি পেলেও আখ চাষে আগ্রহ কেন কমছে?

৩ সপ্তাহ আগে
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আখের রস থেকে হাতে তৈরি লাল চিনির ঐতিহ্য প্রায় আড়াইশ বছরের। সম্প্রতি পণ্যটি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হলেও আখ শোধনাগার বন্ধ থাকা, উন্নত জাত, ন্যায্য দাম ও প্রণোদনা না পাওয়াসহ নানা সংকটে উৎপাদন বৃদ্ধি, মান নিয়ন্ত্রণ আর চাহিদা বাড়ানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার লাল মাটি অধ্যুষিত প্রায় ২০ টি গ্রামে ধান-সবজি ক্ষেতের পাশাপাশি চোখে পড়ে বিস্তৃন আখ খেত।

 

পলাশতলী গ্রামের কৃষক মুসলেম উদ্দিন। কয়েক যুগ ধরে আখ চাষ ও লাল চিনি তৈরির কাজ করছেন তিনি। এবারও আখ আবাদ করেছেন ৮৫ শতাংশ জমিতে। তার মতই উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার কৃষক আমন ধান কাটার পর পৌষ-মাঘ-ফাল্গুন মাসে আখ থেকে লাল চিনি তৈরি করেন।

 

মূলত জমি থেকে আখ সংগ্রহের পর তা পরিষ্কার করে যন্ত্রচালিত কলের সাহায্যে রস বের করা হয়। পরে জ্বালঘরের চুলায় সাতটি লোহার কড়াই বসিয়ে প্রথমে কাঁচা রস জ্বাল দিয়ে ঘন করা হয়। শেষে কাঠের মুগুর দিয়ে বারবার নাড়া দিয়ে তৈরি হয় অদানা বাদামি রঙের লাল চিনি।

 

আরও পড়ুন: বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হবে ১০ লাখ টন ডাল-চিনি

 

কেমিকেলমুক্ত হাতে তৈরি এ পণ্য সম্প্রতি পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। এতে উচ্ছ্বসিত হন স্থানীয়রা।

 

তবে এখন কৃষকরা বলছেন, আখ শোধনাগার বন্ধ থাকা, উন্নত জাত, ন্যায্য দাম ও প্রণোদনা না পাওয়াসহ নানা সংকটে আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। বছর বছর কমছে আখের আবাদ।

 

পরিশোধিত সাদা চিনির তুলনায় আখ থেকে সরাসরি তৈরি হওয়ায় পুষ্টিগুণের দিক থেকেও লাল চিনির রয়েছে বিশেষত্ব। তাই আখের চাষাবাদ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে লাল চিনি শিল্পকে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে রফতানি পণ্য হিসেবে এগিয়ে নিতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের দাবি সংশ্লিষ্টদের।

 

কৃষি বিভাগ বলছে, সংকট নিরসনসহ বিএসটিআই অনুমোদনের লক্ষ্যে কাজ করছে চলছে।

 

আরও পড়ুন: জিআই স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, জিআই স্বীকৃতির ফলে স্থানীয় কৃষক ও উৎপাদকরা আরও উৎসাহী হবেন। এই চিনি অর্গানিক পণ্য হিসেবে বিদেশে রফতানির সুযোগ তৈরি হলে চাষিরা এতে সরাসরি লাভবান হবেন। এজন্য প্রথমে প্রয়োজন বিএসটিআইয়ের অনুমোদন। সেটি পেতে হয়ে সকল কৃষককে মিলে একটি সমিতি করতে হবে। সেটির জন্যই কাজ চলছে। সেইসাথে অন্যান্য সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে উপজেলায় আখ চাষ হয় ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যেখান থেকে লাল চিনি তৈরি হয় ১ লাখ ৩০ হাজার মণ। যার বাজারমূল্য প্রায় শতকোটি টাকা। এবার আখ রোপণ হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন