মাত্র ১০ টাকা খরচ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা এই বাজার থেকে নিজেদের পছন্দমতো হাজার টাকারও বেশি প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনেছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই বাজারে ২৬ ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্য দিয়ে একটি বিশাল ‘সুপারশপ’ সাজানো হয়েছিল। বাজারের স্লোগান ছিল: ‘সবাই মিলে উৎসব সবাই মিলে বাংলাদেশ’।
এই বাজারে জিনিসপত্রের দাম ছিল অবিশ্বাস্যরকম কম: ৫০ পয়সায় ১ কেজি চাল, ১ টাকায় ১ পিস শার্ট, ৪ টাকায় শাড়ি, ৩ টাকায় লুঙ্গি, ৫০ পয়সায় ১ কেজি সুজি, ৩ টাকায় ১ লিটার তেল, ২ টাকায় ১ প্যাকেট নুডলস, চাল, ডাল, চিনি, নারকেল, সুজি, ডিম, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যই ছিল এই বাজারের পসরায়।
এই ব্যতিক্রমী প্রবারণা উৎসবে কক্সবাজার, রামু, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং চৌফলদণ্ডির সহস্রাধিক দরিদ্র পরিবার অংশ নেয়। তাদের জন্য ছিল ফ্রি বাস সার্ভিস এবং মিষ্টিমুখের বিশেষ আয়োজন।
উৎসবের আনন্দ পেয়ে ক্ষেমাসিং মারমা নামের এক অংশগ্রহণকারী বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারিনি প্রবারণা উৎসবে আমাদের দরিদ্র সমাজের জন্য কেউ এত আনন্দ আয়োজন করবে। ১০ টাকা দিয়ে হাজার টাকার বেশি প্রবারণার বাজার করতে পেরেছি, নতুন কাপড় পেয়েছি–আমি খুব খুশি।’
আরও পড়ুন: বিহারে বিহারে প্রার্থনায় শুরু প্রবারণা, ফানুস-প্রদীপে পাহাড়ে উচ্ছ্বাস
রামু রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ জ্যোতিসেন মহাথেরো এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, সব ধর্মের বঞ্চিত মানুষের অংশগ্রহণে এই আয়োজনটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর জামাল উদ্দিন জানান, তাদের লক্ষ্য হলো উৎসব ঘিরে সারা বিশ্বে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সম্প্রীতিকে ধরে রাখা।
প্রবারণা পূর্ণিমার এই ব্যতিক্রমী ‘প্রবারণা বাজার’ কেবল খাদ্য ও পোশাকই দেয়নি, বরং ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’–এই চেতনায় একসঙ্গে বাঁচার এক নতুন বার্তা দিয়েছে।