পারসেল প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্য ফারুক গ্রেফতার

৩ সপ্তাহ আগে
পারসেল পাঠানোর কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের অন্যতম সদস্য মো. ফারুক হোসেনকে (৪৭) গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ই-মেইল এ আসে অজানা ব্যক্তির মেসেজ। অপর পাশে থাকা ব্যক্তি নিজেকে পরিচয় দেন বিদেশে অবস্থান করা ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয়। এসব পরিচয়ে ধীরে ধীরে ভিকটিমের সাথে গড়ে তোলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তারা। সম্পর্কের একপর্যায়ে উপহার পাঠানোর কথা বলে তাদের ফাঁদে ফেলেন। প্রতারকদের দাবি করা টাকা সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দেন তারা। সাধারণভাবে পরিচিত প্রতারণার এ ধরন নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্র নামেই সমাধিক পরিচিত।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এরকম একটি প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। নাম মো. ফারুক হোসেন (৪৭)। তার বাবার নাম মো. আব্দুল করিম। তাদের বাড়ি দিনাজপুরের হাকিমপুরের উত্তর বাসুদেবপুরে। এদিন সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পল্টন থানার শান্তিনগর ব্র্যাক ব্যাংক শাখার সামনে থেকে নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য মো. ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করে।

 

আরও পড়ুন: সাদাপাথর লুটকাণ্ডে গ্রেফতার সাহাব উদ্দিন কারাগারে

 

তদন্তে জানা যায় যে, নাইজেরিয়ান নাগরিক মারলন স্যামুয়েলসসহ কতিপয় প্রতারক পরস্পর যোগসাজসে কখনও বাংলাদেশে বসে, আবার কখনও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে পার্সেলে ডলার অথবা মূল্যবান উপহার পাঠানোর ফাঁদ পেতে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে। এরপর ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন। প্রতারকদের দাবি করা অর্থ তাদেরই সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হতো। এভাবে ওই নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে অর্থ জমা হওয়ার পরপরই প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিতো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়েছে।

 

এরকম একটি ঘটনায় একজন ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানতে পারে যে, এরকম মোট ১৬ জন ভিকটিমের নিকট হতে প্রতারকচক্র সর্বমোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৮ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ প্রতারক চক্রটি। গ্রেফতারকৃত মো. ফারুক  হোসেন (৪৭) এর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স এর পৃথক ০২টি ব্যাংক হিসাব এর প্রথমটিতে ১ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ৬৮৫ টাকা ও দ্বিতীয়টিতে ২১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৫ টাকা লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে সিআইডির অনুসন্ধানে।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ার পর সিআইডি বাদী হয়ে অভিযুক্ত (১) মোমেনা আক্তার রানি (৩৭), (২) মারলন স্যামুয়েলস (নাইজেরিয়ান নাগরিক), (৩) মো. কামরুল মোকসেদ প্রকাশ সাজু (৩৫), (৪) ইমরান হাসান ইকবাল (৩৩), (৫) মো. ফারুক হোসেন (৪৩) এবং (৬) মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স ও (৭) মেসার্স জননী ট্রেডার্সসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন এর বিরুদ্ধে মতিঝিল (ডিএমপি) থানার মামলা নং-১৭/৬৮, তারিখ-১৬/০৩/২০২৫ ইং, ধারা- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) (৪) মামলা রুজু করে।

 

মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাপর অভিযুক্তদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন