পদ্মায় আধিপত্য নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৯

১ দিন আগে
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে আধিপত্য বিস্তার ও মাছ-বালু লুট নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ভোরে বেড় কালোয়া জেলেপাড়া থেকে কালোয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে

 

এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 

আহতরা হলেন: আকরাম হোসেন (৩১), রাজিব শেখ (৩২), আলামিন মণ্ডল (৩৩), রুহুল আমীন (৫২), আশিকুর রহমান (৩২) ও তাজিম শেখ (৫০)। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া কুদ্দুস শেখ (৬৫), দুলাল হোসেন (৪২) ও খুতে শেখ (৩৫) বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে পদ্মায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবুও অবৈধভাবে মাছ ধরা, বালু উত্তোলন ও জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় নিয়ে কয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও ইউপি সদস্য রাশিদুল ইসলাম গ্রুপের সঙ্গে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য বকুল বিশ্বাস ও জেলে নেতা ইয়ারুল ইসলামের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

 

দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা ও লুটপাটের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে।

 

বকুল বিশ্বাস ও ইয়ারুল গ্রুপের অভিযোগ, রাশিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন, শিপন, লিটনসহ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ চালায়। এতে তাদের ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন।

 

আরও পড়ুন: তরুণকে আটকে রেখে চাঁদা দাবি, গ্রেফতার ২

 

অন্যদিকে রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমার ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। তারা চাঁদাবাজি ও লুটপাটের উদ্দেশ্যে এবারও গুলি করেছে। এতে আমার তিন সমর্থক আহত হয়েছেন।’

 

স্থানীয় গৃহবধূ দৃষ্টি খাতুন বলেন, ‘ফজরের আজানের পর সাইদুল মেম্বারের নেতৃত্বে রিপন, শিপনসহ অনেকে গুলি করতে করতে আসে, বাড়িঘর ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে।’

 

আরেক নারী রিনা খাতুন বলেন, ‘চাঁদা না পেয়ে রাশিদুল মেম্বারের লোকজন ভোরে বাড়িতে হামলা চালিয়ে মোবাইল ফোন ও সোনার চেইন নিয়ে গেছে।’

 

আহত বিএনপি কর্মী কুদ্দুস শেখ বলেন, ‘ফজরের নামাজে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ গুলি শুরু হয়। দৌড়াতে গিয়ে আমার হাতে গুলি লাগে।’

 

প্রতিপক্ষের আহত রাজিব শেখ বলেন, ‘গুলির শব্দে ঘুম ভাঙে, বাইরে আসতেই দেখি প্রতিপক্ষ গুলি করছে। পালাতে গিয়ে হাতে-পায়ে গুলি লাগে।’

 

কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি হামলাকারীরা পালিয়েছে। ছয়-সাতজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কিছু বাড়িতে ভাঙচুরও হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে, মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন