পঞ্চগড়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার পর পালালেন স্বামী

১ সপ্তাহে আগে
পঞ্চগড়ের বোদায় মুনিয়ারা খুকি (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন জুলফিকার।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।


নিহত মুনিয়ারার পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকেই স্বামী জুলফিকার ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই নানা অজুহাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন খুকির ওপর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুকির শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খুকি।


পরিবার সূত্র জানায়, প্রথমে মৃত্যুর কারণ ডায়াবেটিকসজনিত বলে জানানো হলেও খুকির গোসলের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের সন্দেহ জন্মে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে পালিয়ে যান স্বামী জুলফিকার। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।


আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২


নিহতের পরিবার আরও জানায়, ১১ বছর আগে জুলফিকার আলীর সঙ্গে খুকির বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তবে বিয়ের শুরু থেকেই নানা অজুহাতে খুকির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো বলে অভিযোগ পরিবারের।


নিহতের বাবা মহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করা হতো। শেষ পর্যন্ত ওরা মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’


খুকির চাচা সামিউল ইসলাম জানান, জুলফিকারের প্রথম স্ত্রীও তার নির্যাতনের কারণে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। আমার ভাতিজিকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে নিয়মিত মারধর করতো সে। স্থানীয়দের কাছ থেকেও জেনেছি, খুকিকে মৃত্যুর আগের দুই দিন খাবারও দেয়নি।


আরও পড়ুন: ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদ করায় মাকে পিটিয়ে হত্যা


স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান প্রধান বলেন, ‘জুলফিকার মাঝে মধ্যেই তার স্ত্রীকে মারধর করতেন এটা এলাকার সবারই জানা। মঙ্গলবার খুকি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে বোদা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মধ্যরাতে মারা যান তিনি। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।


এ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) অনেকেই জুলফিকারকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করলেও ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি হামিদুল্লাহ বলেন, ‘জুলফিকার দলীয় কোনো পদে নেই, তবে সমর্থক হতে পারে।’


বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিহতের শ্বশুর, শাশুড়ি ও আরও একজনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন