জেলার আটপাড়া উপজেলার সুখারি ইউনিয়নের বাউসি গ্রামে বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দিনগত রাতে স্থানীয়রা বাজার থেকে ফেরার পথে সড়কের পাশের খালপাড়ে হাত পা মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা মামুনকে উদ্ধার করে। এমন একটি ভিডিও রাত থেকেই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী, স্বজনসহ এলাকাবাসীরা জানায়, সারের ডিলার আল মামুনকে খুন করার উদ্দ্যেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বাজার থেকে রাতে বাড়ি ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা মামুনকে ধরে হাত পা মুখ বেঁধে গুম করে হত্যার হুমকি দিয়ে মারধর করে মামুনের কাছে থাকা ব্যবসার টাকা দোকানের চাবি মোবাইল সব নিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা টের পেয়ে এগিয়ে গেলে তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। তবে এ ঘটনার আগেই আটপাড়া থানায় জিডি করেছিলেন মামুন। স্বজনরা জানান, পুলিশ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করলে এমন নৃশংসতা করার সাহস পাবে না।
আরও পড়ুন: মোহনগঞ্জে মুদি ব্যবসায়ীকে জবাই করে হত্যা, এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য
ভুক্তভোগী আল মামুন জানায়, তাকে গেল কয়েক মাস ধরে ইলিয়াস রাসেলরা হুমকি দিয়ে আসছিল। মেরে ফেলার হুমকির ঘটনায় মাস খানেক আগে মামুন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কিন্তু গেল দু’তিন দিন আগে আবারও নিয়ে গুম করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কিন্তু গত বুধবার রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে পথরোধ করে ইলিয়াস রাসেল মারধর করতে থাকে। পরে সেও বাঁচার চেষ্টা করলে আরও কয়েকজন মিলে তাকে ধরে হাত পা মুখ বেঁধে ফেলে। জঙ্গলের দিকে নদীর পাড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এরপর হুঁশ না ফিরলে পরবর্তীতে তাকে স্থানীয় লোকজন বাড়ি ফেরার পথে দেখে উদ্ধার করে। তার কাছে ৬২ হাজারের ওপরে ব্যবসায়িক টাকা ছিল সেগুলোসহ মোবাইল চাবি সব নিয়ে গেছে।
স্বজনরা বলছে, তারা ফোন পেয়েছে মামুনকে মেরে নদীতে ফেলে দেয়ার। এই ফোন পেয়ে খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন স্থানীয়রা উদ্ধার করছে। পরে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেও জ্ঞান না ফিরলে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। যেখানে ভর্তি রয়েছে। আল মামুন আটপাড়া উপজেলার সুখারি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান তারা মিয়ার একমাত্র ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গেল ৫ আগস্টে পট পরিবর্তনের পর সারের ডিলারশিপ পরিবর্তন হওয়ায় আওয়ামী লীগের সাবেক ডিলারদের সাথে একটা দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে প্রায়শই হুমকি ধমকি দেয়া এবং পূর্বশত্রুতার ঘটনা ঘটে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) হাফিজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: নেত্রকোনায় কৃষককে পিটিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, ঘটনা নিয়ে মামলা দিলে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়াও যেহেতু আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত একটি ঘটনা তাই পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সাধারণ যে ডায়েরিটা করেছিলো সেটিকে পর্যালোচনা করে মামলার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বিষয়টি দলীয়ভাবে মীমাংসা করার পাঁয়তারা চলছে। আটপাড়া থানার ওসির সংশ্লিষ্টতায়।