সোমবার (৬ অক্টোবর) রাতে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মামলার ৫ নম্বর আসামি মো. জুয়েল (৩৬) এবং ১৮ নং আসামি আকিব ইবনে রাতুল (৩০)।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোব) দুপুরে ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বন্দর উপজেলার সালেহনগর এলাকায় শিশুদের পোশাক ব্যবসায়ী জুয়েল ব্যবসার প্রয়োজনে বেশ কিছুদিন আগে স্থানীয় পোশাক শ্রমিক আলমগীর হোসেন ও তার ছেলে মুন্নার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন। পরবর্তীতে জুয়েল টাকা পরিশোধ না করায় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত এক সপ্তাহ আগে জুয়েলের একটি মোটরসাইকেল বাসায় নিয়ে আটকে রাখেন আলমগীর।
এর জের ধরে গত ৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে এলাকার পারভেজ নামে এক ব্যক্তির একটি গ্যারেজে বিচার সালিশ বসে। কিন্তু আলমগীর সালিশে না যাওয়ায় জুয়েলের নির্দেশে তার সহযোগীরা আলমগীর ও তার ছেলে মুন্নাকে ধরে এনে সালিশে নিয়ে বসায়। সেখানে আলমগীর পাওনা টাকা চাইলে জুয়েল ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে হাতুড়ি ও স্টিলের পাইপ দিয়ে আলমগীরের মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে মুমুর্ষ অবস্থায় আলমগীরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ৪ অক্টোবর শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শার্শায় সালিশে বিএনপির ৫ কর্মীকে পিটিয়ে জখম
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ১৯ জনকে আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করলে আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে পিবিআই এর আভিযানিক দল। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় মামলার প্রধান আসামি জুয়েল ও তার সহযোগী আসামি আকিব ইবনে রাতুলকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান পিবিআই পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিহত আলম গীরের ছেলে মুন্না ও মামলার বাদী ছোট বোন সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন নিহত আলমগীর হোসেনের স্বজনরা।
নিহত হোসিয়ারী শ্রমিক আলমগীর হোসেন বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার মৃত সোহবান মিয়ার ছেলে ও মালেক সিকদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া।