দেশের জন্য উৎসর্গ প্রাণ, বাবার মুখ দেখা হলো না সন্তানের

৪ দিন আগে
টঙ্গীর ভয়াবহ কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ফায়ারফাইটার মো. নুরুল হুদা। সেই আগুন নিভিয়ে যাওয়ার ১২ দিন পর সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম নিল তার পুত্রসন্তান। কিন্তু এই নবজাতক পৃথিবীর আলো দেখতে পেলেও, দেখা হলো না দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বাবার মুখ।

শোকস্তব্ধ পরিবারের কেউ নিশ্বাস ফেলে বলেন, 'বাবার ছায়াই যেন ফিরে এসেছে।' কেউ কেউ চোখের কোণে জমে থাকা জল চাপা দিয়ে বুকের গভীরে ধরে রাখেন নিঃশব্দ কান্না। চারপাশে এক নতুন প্রাণের জন্ম হলেও, পরিবারের হৃদয়ে যেন স্থির হয়ে আছে ২৪ সেপ্টেম্বরের সেই বিভীষিকাময় বিকেল, যেদিন চিরতরে নিভে গেল সাহসী অগ্নিযোদ্ধা নুরুল হুদার জীবনপ্রদীপ। সময় এগিয়ে চলেছে, কিন্তু তার শূন্যতা পেছনে রেখে গেছে এক গভীর, অপূরণীয় শোক।


২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে টঙ্গীর সাহারা মার্কেট এলাকায় একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ হন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ারফাইটার মো. নুরুল হুদা। পরদিন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই সাহসী অগ্নিযোদ্ধা।


মো. নুরুল হুদা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৭ সালের ২১ জুলাই, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ধামাইল গ্রামে, এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ফায়ার সার্ভিসে ফায়ারফাইটার হিসেবে যোগ দেন তিনি। কর্মজীবনে ছিলেন নিষ্ঠাবান, সাহসী এবং দায়িত্বশীল।


আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা


জীবন দিয়ে দায়িত্ব পালনের এমন গল্পে কাঁদছে পুরো জাতি। পেছনে রেখে গেছেন স্ত্রী, এক ১০ বছরের কন্যা, ৩ বছরের পুত্র এবং সদ্য জন্ম নেওয়া এই শিশু সন্তান, যে বাবা বলে ডাকতেই পারবে না কোনোদিন।


নিহত নুরুল হুদার সন্তানকে দেখতে এসে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, নুরুল হুদা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী এবং নিবেদিতপ্রাণ। তার মতো সহকর্মীকে হারানো আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর পরিবারের পাশে আমরা সবসময় থাকব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন