দুই বছর ধরে বন্ধ মোংলা বন্দরের জেটি নির্মাণ কাজ, শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা!

৪৯ মিনিট আগে
মোংলা বন্দরে দুইটি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ কাজ প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ২০১৮ সালে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পটি শুরু হলেও এখন তা শেষ হওয়া নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ই বলছে, নির্ধারিত নতুন সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হবে।

২০১৮ সালে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে। প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল বছরে এক লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা অর্জন করা। প্রকল্পের আওতায় ২২ একর এলাকার ওপর নতুন দুটি জেটি নির্মাণ, একটি কন্টেইনার ইয়ার্ড, ফুয়েল স্টেশন, মাল্টিপারপাস ভবন ও ওয়ার্কশপসহ মোট সাতটি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এর জন্য মোট খরচ ধরা হয় প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

 

তবে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৬২ শতাংশ ছিল। মোংলা বন্দরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং আশা করছে নতুন সময়সীমার মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর: জাহাজ জট কমায় লাখ লাখ ডলার সাশ্রয় ব্যবসায়ীদের

 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘জেটি নির্মাণ প্রকল্পের ৬২ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছুদিন ধরে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। আমরা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা আমাদের দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে। আমরা আশা করছি বন্ধ থাকা কাজ খুব দ্রুতই পুনরায় শুরু হবে। জেটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়বে।’

 

 

বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানও আশ্বাস দিয়েছে যে, আর্থিক সংকট সামলানোর পর কাজ দ্রুত পুনরায় শুরু করা হবে। কোম্পানির পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বড় প্রকল্প। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে এরই মধ্যে নির্মাণ কাজের বেশিরভাগ বিনিয়োগ আমরা সম্পন্ন করেছি। অনেক ভবন নির্মাণও শেষ হয়েছে। আমরা বন্দরের সঙ্গে ব্যবসা করতে মুখিয়ে আছি। আশা করছি দ্রুত অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে পুনরায় জেটি নির্মাণ শুরু করতে পারব। নতুন নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৬ সালের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।’

 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় কাজ বন্ধ থাকায় বন্দরের সামগ্রিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং স্থানীয় অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক খান মেহেদী হাসান বলেন, ‘দুই বছর ধরে কাজ বন্ধ থাকায় বন্দরের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হওয়া প্রয়োজন। না হলে বন্দরের কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নের যে পরিকল্পনা রয়েছে, তা ব্যাহত হবে।’

 

মোংলা বন্দরের সঙ্গে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তি অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় দুই বছরের নির্মাণকাল এবং ২৮ বছরের অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন