রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ট্রাম্প বলেন, “তারা এখন টিকটক নিয়ে আলোচনা করছে। আমরা চাইলে এটাকে বন্ধ করে দিতে পারি, আবার চালিয়েও যেতে পারি… জানি না। এটা চীনের ওপর নির্ভর করছে। বিষয়টা আমার কাছে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
তবে তিনি উল্লেখ করেন, শিশু-কিশোররা যেহেতু টিকটক পছন্দ করে তাই তাদের জন্য তিনি এটা চালু রাখতে চাইবেন।
নিজের রাজনৈতিক সুবিধার কথাও টেনে এনে ট্রাম্প বলেন, “স্বার্থপরভাবে বলতে গেলে, আমি টিকটকে ভালো করেছিলাম। তরুণদের ভোট পেয়েছি… কিছুটা এর কৃতিত্ব টিকটকের।”
ট্রাম্প প্রশাসন আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের ডেডলাইন চতুর্থবারের মতো বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে। ওই সময়ের মধ্যে চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সকে টিকটকের মার্কিন শাখা বিক্রি করতে হবে, নইলে অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সূত্রের বরাতে রয়টার্স বলছে, নতুন সময়সীমা নির্ধারণের পদক্ষেপের বিষয়ে দ্বিধায় আছে মার্কিন প্রশাসন, কারণ অ্যাপটি ১৭ কোটি মার্কিন নাগরিক ব্যবহার করেন। যদিও কংগ্রেস জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে টিকটক বিক্রির ওপর জোর দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: টিকটকার প্রিন্স মামুনের সেলুন কেনার গুঞ্জন অপু বিশ্বাসের!
ট্রাম্প আরও ইঙ্গিত দেন, যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের অনুমোদন— বিশেষ করে টিকটকের অ্যালগরিদম— গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনাতেও (যেখানে ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ও ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ার যুক্ত আছেন) টিকটকের প্রসঙ্গ আসবে।
আমেরিকায় গত বছর থেকেই টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়গ ঝুলছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে এখনও দেশটিতে সচল আছে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটি। কিন্তু দেশটিতে টিকটকের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুর চূড়ান্ত সমাধান এখনও হয়নি।
বিষয়টির সুরাহা করতে ট্রাম্প প্রশাসনকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে চীন। গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী টিকটক সম্পর্কিত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবে চীন। পাশাপাশি টিকটককে ঘিরে সৃষ্ট উদ্বেগ নিরসনে আমেরিকাকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
ট্রাম্পের পূর্ববর্তী বাইডেন সরকার প্রণীত আইনে অ্যাপটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বাইটড্যান্সকে টিকটকের আমেরিকার বিজনেসের নিয়ন্ত্রণমূলক মালিকানা ছেড়ে দিতে হবে আমেরিকান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে।
আরও পড়ুন: টিকটকে আয় করার উপায়
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প দফায় দফায় টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছেন।
গত জুনে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, টিকটক কিনতে আগ্রহী একদল ধনী ক্রেতা পাওয়া গেছে। তবে যেকোনো চুক্তির বাস্তবায়নে চীন সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ, চীনের হস্তক্ষেপ ছাড়া অ্যাপটির নিষেধাজ্ঞা সমস্যার সমাধান হবে না।