জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের আহ্বানে একসঙ্গে বসেনি দলগুলো। উল্টো পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সরব নেতারা। বিএনপি নির্বাচন নিয়ে মনোযোগী হলেও রাজপথে জামায়াতসহ ইসলামপন্থি দলগুলো।
বিপরীতে বিএনপি অবশ্য এখনই মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছে না। তবে নির্বাচনের আগে গণভোটের তীব্র বিরোধিতায় দলটি। এছাড়া সনদের আদেশ ও সংবিধানে স্বয়ংক্রিয় প্রতিস্থাপনের সুপারিশকে ইয়াহিয়া খানের ফরমানের সঙ্গে তুলনা করছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, আপত্তি উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তা মানবে না বিএনপি।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের বিবৃতি /মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে হয়রানিমূলক মামলা থাকলে তুলে নেয়া হবে, দেশব্যাপী মামলার
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন,
এটা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ইয়াহিয়া খানের ৭০ সালের নির্বাচন। এলএফও দিছে, এলএফও হলো লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার। আমাদের কী এলএফও মেনে কাজ করতে হবে। এটা তো পাকিস্তান না, এটা বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশে স্বাধীন হয়েছে। গুটি কয়েক মানুষ বলবে আর সেটা আমাদের মানতে হবে তাহলে বিএনপি একটা বড় স্টেকহোল্ডার থাকলো কেমন করে। তারা যদি ইয়াহিয়া খানের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। ওটাকে কবে আমরা ফেলে দিয়েছি।
অন্যদিকে, দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও নির্বাচনের আগে গণভোট দাবিতে অনড় অবস্থানে জামায়াত। দাবি আদায়ে আলোচনার দুয়ার খোলা রাখার পাশাপাশি রাজপথেও সক্রিয় থাকবে দলটি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন,
সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হতে পারে এ রাস্তা উন্মুক্ত আছে। তবে আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। সময়ক্ষেপণ করতে করতে এমন জায়গায়তে নিয়ে যাবেন, আর তখন বলবেন যে নির্বাচনের আগে সময় নেই, এই ফাঁদে কিন্তু জনগণ পা দেবে না। এজন্য আমরা রাজপথে আছি। জনগণকে সাথে নিয়ে দাবি আদায় করবো।
এনসিপি অবশ্য গণভোটের সময় প্রশ্নে নমনীয় হলেও নোট অব ডিসেন্ট ছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দাবিতে সরব। আর দলগুলোর সমঝোতা না হলে রাজপথ ফের উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা দলটির এক শীর্ষ নেতার।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াত আমির
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন,
দুই বড় দল তারা আসলে জুলাই সনদকে জিম্মি করেছে এবং জিম্মি করে নিজ নিজ রাজনৈতিক স্বার্থ আদায় করতে চাচ্ছে। সনদের জন্য আমরা রাজপথে যেতে চাই না। গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা শেষ হয়েছে এবং গোলটেবিলেই সেটা শেষ করতে হবে। তা না করে রাজনৈতিকদলগুলো রাজপথে চলে যায় তাহলে তো সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠবে। সেটা খুবই দুঃখজনক এবং খুবই উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি লাগবে, সাংবিধানিক ভিত্তি লাগবে এটা বাংলাদেশের জনগণের দাবি। যদি সরকার এটা না করে, রাজনৈতিক দলগুলো এটা না করতে দেয়, তাহলে জনগণই এবার রাস্তায় নামবে।
দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যে সবপক্ষের দাবি সমন্বয় করে সমাধানের পথ খুঁজছে অন্তর্বর্তী সরকার।
উপদেষ্টাদের আশা, সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট ইস্যুতে যে সিদ্ধান্তই আসুক তা মেনে নেবে দলগুলো। আর কোনো ইস্যুতে আপত্তি থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থেই দলগুলো সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে না বলে মনে করছেন একজন বিশ্লেষক।
আরও পড়ুন: যারা সংস্কারের বিপক্ষে তাদের সঙ্গে কোনো জোট নয়: হাসনাত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, যদি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যেহেতু আপনারা নিজেরা ঠিক হবেন না, তাহলে আমি চলে যাই। তখন যাবে কোথায় সবাই? হ্যাঁ, তাকে যদি ওই পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া হয়, তিনি পদত্যাগ করেন, তখন তো সবার জন্য বিপদ।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের দায় এড়ানোর কৌশলের কারণেই নির্ধারিত ৭ দিনে কোনো ফল আসেনি।
]]>

২ সপ্তাহ আগে
৩






Bengali (BD) ·
English (US) ·