জুলাই সনদ ইস্যুতে গভীর সংকটের আশঙ্কা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আগামীকাল রোববার (৫ অক্টোবর) বৈঠকে বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলো একমত না হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের মতে, সনদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে গভীর সংকটে পড়বে দেশ। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মনে করেন, সংস্কার নিয়ে কমিশনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে সংকট তৈরি হয়েছে।

 

ছয়টি সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আলোচনায় এখন পর্যন্ত ৮৪টি প্রস্তাবে ঐকমত্য হলেও অনেক মৌলিক বিষয়ে এখনও মতভিন্নতা রয়েছে।

 

সবচেয়ে জটিলতা দেখা দেয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে। সংসদেই চূড়ান্ত ফয়সালা চায় বিএনপি। তবে সাংবিধানিক আদেশ বা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনি বাধ্যবাধকতা চায় জামায়াত-এনসিপিসহ অন্য দলগুলো।

 

এমন পরিস্থিতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন। কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার সময় সংবাদকে জানান, আলোচনায় দলগুলো একমত না হলে সরকারকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেয়া হবে।

 

আরও পড়ুন: জামায়াত লাইম লাইটে এলেও জনমনে প্রভাব পড়েনি: মির্জা ফখরুল

 

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ৫ অক্টোবর আমরা একত্র হব। তাদের কাছ থেকে শুনতে চাইব যে, তারা কী ঐকমত্যে পৌঁছেছে। ঐকমত্যে পৌঁছালে তো কোনো সমস্যাই নেই। ফলে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবে। স্বাক্ষর হওয়ার মাধ্যমে যে পদ্ধতিতে তারা একমত হয়েছে, সেই পদ্ধতিতেই সেটা বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু সমঝোতায় না পৌঁছালে সরকারের কাছে আমরা সুপারিশ করবো। সরকার সুপারিশ রাখতেও পারে, আবার নাও রাখতে পারে। সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’

 

তবে জুলাই সনদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে বলে মনে করেন বদিউল আলম মজুমদার। কমিশনের এ সদস্য আরও বলেন, 

প্রায় এক বছরে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এতগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিনের পর দিন আলোচনা হয়েছে। যেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। আমাদের যেটা সংকট, সেটা হচ্ছে অপেক্ষা করছি।

 

আরও পড়ুন: মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গ্রিন সিগনাল দিচ্ছে জামায়াত, কী বলছে শীর্ষ নেতৃত্ব?

 

জুলাই সনদ নিয়ে সংকটের জন্য কমিশনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে দুষছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন,‘ প্রথম থেকেই আমার মনে হয়েছে ঐকমত্য কমিশন অতি মাত্রায় উচ্চাকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এ কারণে তারা এটার কোনো শেষ দেখতে পাচ্ছে না। আমার ধারণা, তারা এটা পারবেও না।’  

 

দলগুলোর ভোটাভুটির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এ অধ্যাপক।

]]>