চাকসু নির্বাচন: মনোনয়ন বিতরণ শুরু রোববার

৩ সপ্তাহ আগে
তিন যুগ পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। আগামী ১২ অক্টোবর এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

আগামীকাল রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে মনোনয়নপত্র ফরম বিতরণ করা হবে। ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৪টি এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ভোট কার্যক্রম।


এ দিকে চাকসু ভবনও সাজছে নতুন রূপে। দীর্ঘদিনের অবহেলায় জোবরা ভাতের হোটেল নামে পরিচিত এ ভবনটিতে চলছে দেয়ালে রঙের কাজ ও কক্ষ সংস্কারের কার্যক্রম।


ভয়েস অফ স্টুডেন্টস গ্রুপের একজন এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘চাকসু ভবনের ক্যাফেটেরিয়া নামে যে পরিচিত ছিলো। এখানে শুধু খাবার খাওয়া হতো। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের চাওয়া ছিলো যে চাকসু হবে। আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি ডাকসু হয়েছে। প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আমেজ দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীরাই চান যেন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়।’


আরও পড়ুন: শনিবার রাতেই প্রকাশিত হবে চাকসু নির্বাচনের সংশোধিত ভোটার তালিকা


তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসেই আমরা দেখেছি নির্বাচনের উৎসবমুখর আমেজ। আমরা অনেকে আশাবাদী ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসন ও পরিবহন সংকট সমাধান হবে।’


জানা যায়, রোববার থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হবে, যা চলবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন। কেন্দ্রীয় সংসদের মনোনয়ন ফরমের মূল্য ৩০০ টাকা আর হল সংসদের মনোনয়ন ফরমের মূল্য ২০০ টাকা। প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করাতে হবে এবং ফলাফল পজিটিভ হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকবে। নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদগুলো।


নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। শাখা ছাত্রদলের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জালাল সিদ্দিকী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমেজের থেকে আশঙ্কাটা বেশি দেখতে পাচ্ছি। কারণ হচ্ছে যে, সাম্প্রতিক স্থানীয়দের ঝামেলা নিয়ে প্রশাসনের যে অদূরদর্শিতা দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে যে, আসলেও সুষ্ঠু চাকসু আয়োজন করতে পারবে কিনা। ক্যাম্পাসে প্রত্যেকটি সংগঠনের এটা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ দৃষ্টি নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি ছাত্র সংগঠনের যে প্রস্তাবনা, সেটা আমলে নেয় না। সর্বশেষ মতবিনিময় সভায় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মতের গুরুত্ব দেয়নি।’


আরও পড়ুন: চাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি নিয়ে মতবিনিময় সভা বয়কট করল ছাত্রদল


শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৬ বছর চাকসু হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমেজ বিরাজ করছে। প্রশাসনকে আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, তারা দীর্ঘ ৩৬ বছর পর উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি, যেন বিশেষ কোনো সংগঠন সুবিধা না পায়। যেমন আমরা ডাকসুতে দেখেছি, অনেকে আচরণবিধি ঠিকমত অনুসরণ করেনি। এই ধরনের কাজ যদি ছাত্র সংসদে হয় তাহলে সেটি প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’


অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মনির উদ্দিন জানান, নির্ধারিত তারিখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গঠনতন্ত্র, আচরণবিধি ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা শেষের পথে। আগামীকাল থেকে ছাড়া হবে মনোনয়ন ফরম। সব কার্যক্রম পরিকল্পনা মাফিক সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।


১৯৯০ সালের পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ বিরতির পর ভোটের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন