বুধবারের (১৫ অক্টোবর) নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ, সঙ্গে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ভোটার, প্রার্থী ও প্রশাসন। প্রতিটি অনুষদ ভবন, আবাসিক হল, টিএসসি থেকে শুরু করে ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত এখন নির্বাচনী উচ্ছ্বাসে ভরপুর।
সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের দুটি ভবন- মোট পাঁচটি ভবনে ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪টি কেন্দ্রে হল সংসদ ও ১টি কেন্দ্রে হোস্টেল সংসদ নির্বাচন হবে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য চাকসু ভবনে আলাদা ভোটকেন্দ্র রাখা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পাঁচটি অনুষদের প্রতিটিতে একজন করে মোট পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া কেন্দ্রগুলোর বাইরে আরও চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবে মোবাইল কোর্ট। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন।
আরও পড়ুন: দুই লেয়ারে হবে চাকসুর ভোট গণনা: উপ-উপাচার্য
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। বহিরাগত প্রবেশে থাকবে কড়া নজরদারি।
প্রার্থীর সংখ্যা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা
চাকসু নির্বাচনে মোট প্রার্থী হয়েছেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ভিপি পদে ২৪, জিএস পদে ২২, এজিএস পদে ২১, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১২, সহ-খেলাধুলা সম্পাদক ১৪, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক ১৭, সহ-সাহিত্য সম্পাদক ১৫, দপ্তর সম্পাদক ১৭, সহ-দপ্তর সম্পাদক ১৪, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ১৩, সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ১০, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক ১১, গবেষণা সম্পাদক ১২, সমাজসেবা সম্পাদক ২০, স্বাস্থ্য সম্পাদক ১৫, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক ১৭, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ১৬, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ১৭, সহ-যোগাযোগ সম্পাদক ১৪, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ৯, পাঠাগার সম্পাদক ২০ ও নির্বাহী সদস্য পদে ৮৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: চাকসু নির্বাচন: বিশেষ কেন্দ্রে ভোট দেবেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা
অন্যদিকে ১৪টি হল সংসদে লড়বেন ৪৭৩ জন প্রার্থী- এর মধ্যে ছাত্রদের ১০টি আবাসিক ইউনিটে ৩৫০ জন এবং ছাত্রীদের ৫টি হলে ১২৩ জন প্রার্থী রয়েছেন।
নির্বাচন উপলক্ষে বুধ ও বৃহস্পতিবার স্থগিত থাকবে ক্লাস ও পরীক্ষা। ভোট গ্রহণ থেকে শুরু করে গণনা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে ১৪টি এলইডি স্ক্রিনে লাইভ সম্প্রচার করা হবে। শিক্ষার্থীরা যেন ক্যাম্পাসে এসে ভোট দিতে পারে তার জন্য বাড়ানো হয়েছে শাটলের ২টি ট্রিপ ও দেয়া হয়েছে ১৫টি বাস। ৩৬ বছরের দাঁড়গোড়ায় এসে প্রত্যাশিত এই নির্বাচনের জন্য সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী। একটি সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন শিক্ষার্থীরা।
কোন কেন্দ্রে কত ভোটার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ভোটার রয়েছেন ২৭ হাজার ৫১৮ জন- এর মধ্যে ১৬ হাজার ১৮৯ জন পুরুষ ও ১১ হাজার ৩২৯ জন নারী ভোটার। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য চাকসু ভবনে ১টি বিশেষ কেন্দ্রে।
আরও পড়ুন: গ্রহণযোগ্য চাকসু ও রাকসু নির্বাচন আয়োজনে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান ছাত্রশিবিরের
প্রকৌশল অনুষদে ৪ হাজার ৩৬ জন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনে ৫ হাজার ২৬৩ জন, বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ৪ হাজার ৫৩৮ জন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবনে ৬ হাজার ৬০৬ জন এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনে ৭ হাজার ৭৩ জন শিক্ষার্থী ভোট দেবেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) গঠিত হয় ১৯৬৬ সালে, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। এরপর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক জটিলতায় ৩৬ বছর পর হচ্ছে চাকসু নির্বাচন।
]]>
১ সপ্তাহে আগে
২







Bengali (BD) ·
English (US) ·