গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের দুই বছরে আর্থিক ক্ষতি ৬৮০০ কোটি ডলার!

২ দিন আগে
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের দুই বছরে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৬ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে পুরো গাজা উপত্যকায় কার্যকর আছে মাত্র ১৪টি হাসপাতাল। ইসরাইলি হামলায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে আট শতাধিক মসজিদ। কবরস্থান ধ্বংস করতেও বাদ রাখেনি নেতানিয়াহু বাহিনী।

সাজানো, পরিপাটি, আধুনিক একটি নগর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গেল। ইসরাইলের নির্যাতন আর গণহত্যার দুই বছরে ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। নেতানিয়াহু বাহিনীর আগ্রাসনে উপত্যকাটি এমন এক দুর্বিষহ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা হয়ত ট্রয় নগরীর গল্পকেও হার মানাবে।

 

অমানবিকতার সব ধাপ লঙ্ঘন করে নেতানিয়াহু বাহিনীর আগ্রাসনের মূল কেন্দ্র হয়ে ওঠে গাজার হাসপাতালগুলো। হামাসের আশ্রয়স্থল হিসেবে আখ্যা দিয়ে একের পর এক হাসপাতালের ওপর বিমান হামলা চালায় আইডিএফ। 

 

গাজা সিটির চারটি হাসপাতাল গেল মাসেই অকেজো হয়ে পড়ে। বর্তমানে পুরো গাজা উপত্যকায় কার্যকর আছে মাত্র ১৪টি হাসপাতাল। এর মধ্যে ৮টি গাজা সিটিতে, আর বাকি ৬টি দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে। আংশিক কার্যকর হাসপাতালগুলোতে এখন রোগীতে উপচে পড়ছে। রোগীদের কেউ তাঁবুতে, কেউ হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

শুধু গাজার স্বাস্থ্যখাতই নয়, বরং ধর্মীয় উপাসনালয় ইসরাইলি আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: ইসরাইলি আগ্রাসনের ২ বছর /অত্যাধুনিক অস্ত্র মোকাবিলা করেও যেভাবে টিকে আছে হামাস

 

গাজার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ইসরাইলি হামলায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে ৮৩৪টি মসজিদ। আংশিক বা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ২৭৫টি। এছাড়া, গাজার সিটিতে অবস্থিত তিনটি ঐতিহাসিক গির্জাও ধ্বংস করে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। ৬০টি কবরস্থানের মধ্যে ৪০টিতে হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। এর মধ্যে ২১টি পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

 

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার অর্থনীতি ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের হিসাবে, ৯০ শতাংশ অবকাঠামো এখন ধ্বংস, ক্ষতির পরিমাণ ৬৮০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। 

 

জাতিসংঘ, ইইউ ও বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধারে এখন অন্তত প্রায় ৫৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট ক্ষতির অর্ধেকের বেশি প্রায় তিন হাজার কোটি ডলার কেবল ভবন ও অবকাঠামো পুনর্গঠনে ব্যয় হবে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আবাসন খাত। ধ্বংস হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৯২ হাজার বাড়ি, যা মোট ধ্বংসযজ্ঞের ৫৩ শতাংশ।

 

আরও প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার প্রয়োজন হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্য খাত পুনর্গঠনে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলায় ৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন