গভীর সমুদ্রের অন্ধকারে আল্লাহর নিদর্শন

৩ সপ্তাহ আগে
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি অংশে আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। আকাশমণ্ডল থেকে সমুদ্রের গভীর তলদেশ পর্যন্ত, যেদিকেই তাকানো যায়, সেখানে আল্লাহর সৃষ্টির মহিমা ফুটে ওঠে। আজ আমরা জানব এমন এক বিস্ময়কর নিদর্শন সম্পর্কে, যা লুকিয়ে আছে আমাদেরই পৃথিবীর গভীর সমুদ্রে।

গভীর সমুদ্রের বাস্তবতা

 

সমুদ্রের গভীর স্তর বা ডিপ সি রিজন হলো এমন এক অঞ্চল, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না বা খুব সামান্য পৌঁছায়। এটি থার্মোক্লাইনের নিচে এবং সমুদ্রতলের উপরে, প্রায় ১,৮০০ মিটার বা তারও বেশি গভীরে অবস্থিত। এই অঞ্চলে অন্ধকার এমন ঘন যে সেখানে কেউ নিজের হাতও দেখতে পায় না।

 

তবুও আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই গভীর অন্ধকারেও জীবন থেমে নেই। একসময় বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, এই অঞ্চলে জীবনের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু যখনই কোনো গবেষণা অভিযান সেখানে পাঠানো হয়েছে, দেখা গেছে, অগণিত জীব এক বিস্ময়কর পরিবেশে টিকে আছে। আল্লাহ তাআলার মহাশক্তিরই তো এ এক অপূর্ব প্রমাণ!

 

আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় স্ত্রী

 

কুরআনের দৃষ্টিতে গভীর সমুদ্র

 

কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীর অবস্থা বর্ণনা করতে এই গভীর সমুদ্রের অন্ধকারের উদাহরণ দিয়েছেন,

 

অথবা (অবিশ্বাসীর অবস্থা) এমন এক গভীর সমুদ্রের অন্ধকারের মতো, যার ওপর ঢেউ, তার ওপর আরও ঢেউ, তার ওপর মেঘ; অন্ধকারের পর অন্ধকার, যদি কেউ তার হাত বাড়ায়, সে সেটিও প্রায় দেখতে পায় না। আল্লাহ যাকে আলো দান করেননি, তার জন্য কোনো আলো নেই। (সুরা আন-নূর: ৪০)

 

এ আয়াতে যেমন একাধিক স্তরের অন্ধকারের কথা বলা হয়েছে, বিজ্ঞানও বলছে সমুদ্রের গভীরে ঠিক এমন স্তরবিন্যাসযুক্ত অন্ধকার বিদ্যমান, একটি নিখুঁত সামঞ্জস্য কুরআনের বাণী ও আধুনিক বিজ্ঞানের মধ্যে।

 

জ্ঞানের সীমা অতিক্রম

 

বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর স্থান চ্যালেঞ্জার ডীপ, যা প্রায় ১১ কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। এই বিশাল দূরত্ব আমাদের চোখে অদৃশ্য হলেও, এটি আল্লাহর সৃষ্টির অসীমতা ও তার জ্ঞানের গভীরতারই প্রতিফলন।

 

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন,

 

আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনসমূহ দেখাব, দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে, যতক্ষণ না তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে এটি সত্য। (সুরা ফুসসিলাত: ৫৩)

 

গভীর সমুদ্রের অন্ধকার, সেখানে জীবনের উপস্থিতি, আলোবিহীন জগতে সৃষ্টির ভারসাম্য, এসবই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, মহান স্রষ্টার সামনে মানুষের জ্ঞান কত ক্ষুদ্র। সত্যিই, যার জন্য আল্লাহ আলো দান করেননি, তার জন্য কোনো আলো নেই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন