খুলনার জলাবদ্ধতা নিয়ে মতবিনিময় সভায় স্থানীয়দের ক্ষোভ

৩ সপ্তাহ আগে
‘বছরের পর বছর পানির নিচে ঘরবাড়ি, ফসলের জমি চাষের অনুপযোগী, সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছি না, পানি উন্নয়ন বোর্ড যেসব প্রকল্প নেয়া হয়, তা কোনোভাবেই কার্যকর না, নদী ড্রেজিং প্রকল্প নেয়া হয়, কিন্তু ঠিকাদার কাজ না করেই চলে যায়।’ জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে স্থানীয়দের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডুমুরিয়ার পানিবন্দি মানুষ।

 শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বিল ডাকাতিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এমন অভিযোগে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা।

তাদের অভিযোগ, নানা প্রকল্প আর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তব সমস্যার সমাধান হয়নি। শোলমারি নদীর ওপর নির্মিত দশ ভেল্টের স্লুইস গেটটি তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অকার্যকর পড়ে আছে। সম্প্রতি দু’টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বসানো হলেও তাতেও তেমন সুফল মিলছে না। ফলে প্রতিনিয়ত পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো পরিবারকে।


স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘তিন বছর ধরে ঘরে পানি। বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।’ শেফালী বেগমের অভিযোগ, ‘জলাবদ্ধতার কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না, ঘরে রান্নাবান্না করতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

আরও পড়ুন: শিপইয়ার্ড সড়ক, মাহাবুব ব্রাদার্সের মামলায় আবারও জটিলতা

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিএম আব্দুল মোমিন বলেন, ‘বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি, চলতি বছর গত বছরের তুলনায় বৃষ্টিপাত বেশী হয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি বেশী খারাপ হয়েছে। তিনি তাদের উদ্যোগের কারণেই পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে।


এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে শোলমারি নদীর উপর নির্মিত দশ ভেল্টের স্লুইস গেটটি। গত তিন বছর ধরে যে গেটটি অকার্যকর হয়ে আছে। ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে শোলমারি গেটে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি পাম্প স্থাপন করা হয়। যেখান থেকে পানি নিস্কশনের ব্যবস্থা করা হয। তবে অভিযোগ ওঠে এরপরেও খুব একটা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ফলে জলাবদ্ধ পরিস্থিতি দেখতে ও করনীয় ঠিক করতে জলাবদ্ধ এলাকা ও শোলমারি গেট এলাকা পরিদর্শন করেন খুলনার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান।


মতবিনিময় ও এলাকা পরিরদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানান, স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘবে মধ্যবর্তী একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুত কাজ শুরু হলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের পথ তৈরি হবে। জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘শোলমারি গেট থেকে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মানুষের কষ্ট আমরা বুঝতে পারছি। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ ভোগান্তি দূর হবে।’

আরও পড়ুন: খুলনায় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি: মহানগরে ১২০, জেলায় ৮৫৭ মণ্ডপে পূজা

খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলায় গত দুই মাস ধরে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। জমিতে চাষাবাদ বন্ধ, মাছ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যাতায়াত মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, স্থায়ী সমাধান ছাড়া জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ আকার নেবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন