সরেজমিনে দেখা যায়, শঙ্খ ও উলু ধ্বনি আর ঢাকের তালে মুখরিত পুরো এলাকা। ধন-সম্পদ প্রাপ্তির আশায় এবং সংসারে সুখ-শান্তি কামনায় লক্ষ্মী দেবীর আরাধনায় মগ্ন ভক্তরা। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ জড়ো হয়েছেন, সব মিলিয়ে উৎসবের আনন্দ ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে।
প্রতিবছর কোজাগরী পূর্ণিমার দিন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার নবগ্রামে শুরু হয় বিষ্ণু পত্মী লক্ষ্মী দেবীর পূজা। সন্ধ্যা থেকে রাতভর প্রতিটি মণ্ডপে চলে নৃত্য, সংগীত, নাটক, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন দেখতে শুধু মাদারীপুর জেলার মানুষ নয়, পাশের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল ও শরিয়তপুরের দর্শনার্থীরাও ছুটে আসেন।
শিশু-কিশোরসহ হাজারো দর্শক অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। আয়োজকরা জানান, এলাকার সুনাম দেশের অন্যান্য প্রান্তেও ছড়িয়ে গেছে এবং আগামীতে আরও বৃহৎ আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা যায়, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই তিনদিনের উৎসব বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। বহু যুগ ধরে ধন-সম্পদের দেবী শ্রী শ্রী লক্ষ্মী পূজাকে ঘিরে নবগ্রামের বিভিন্ন এলাকা সাজানো হয় বর্ণিল আলোকসজ্জায়।
আরও পড়ুন: কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা আজ
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষার্থী অর্পিতা দেবনাথ বলেন, ‘একসঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ মিলে অনুষ্ঠান দেখার মজাই আলাদা। এ যেন এক মিলন মেলা। সবাই মুগ্ধ হয়।’
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার ঘাঘরবাজারের ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর নবগ্রামে লক্ষ্মী পূজা দেখতে আসি। এটি খুবই বড় আকারে হয়ে থাকে। বন্ধুদের সঙ্গে অনুষ্ঠান দেখে আনন্দ পাই।’
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদি এলাকা থেকে আসা গৌতম পাল বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি। এখানে আমার এক আত্মীয়ের বাড়ি। তাই তিন থেকে চারদিন বেড়ানো হয়, আর পূজার অনুষ্ঠানও দেখা হয়। সবাই মিলে আনন্দ করি।’
সরকারবাড়ি লক্ষ্মী পূজার আয়োজক নৃপেন বৈদ্য বলেন, ‘নবগ্রামে যে কয়টি পূজা হয়, তার মধ্যে পুলিনবিহারীর বাড়ি অর্থাৎ সরকারবাড়িতে সবচেয়ে বড় আকারে এই অনুষ্ঠান হয়। এটি দেখতে আশেপাশের কয়েকটি জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শক আসেন। দর্শকদের সুবিধা ও নিরাপত্তা বিবেচনা করে অনুষ্ঠানটি বড় আকারে আয়োজন করা হয়। ভবিষ্যতে নতুন আকর্ষণও থাকবে, যাতে দর্শকরা আরও আনন্দ পান।’
মাদারীপুরের ডাসার থানার উপপরিদর্শক সুবির সূত্রধর জানান, ‘নবগ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে লক্ষ্মী পূজা উদযাপিত হয়। তাই থানা পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে এবং পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পর্যাপ্ত পুলিশ কাজ করছে।’
]]>