গত গ্রীষ্মে তোর্তুগুয়েরো ন্যাশনাল পার্কের কাছে মাছ ধরার সময় শিকারিদের জালে ধরা পড়ে ছয় ফুট লম্বা এক হাঙ্গর। এর চোখ ছিল সাদা আর শরীর ছিল সোনালি রঙের। এমন রঙের হাঙ্গর তারা এর আগে কখনওই দেখেননি।
হাঙ্গরটিকে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেন মৎস্যশিকারিরা। তবে তার এর কয়েকটা ছবি তুলে স্থানীয় গবেষকদের কাছে পাঠান তারা। প্রথমে অনেকে এই ছবিকে ভুয়া বলে সন্দেহ করলেও পরে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেন, এটা আসল। তারা জানান, হাঙ্গরটির অস্বাভাবিক রং এসেছে অ্যালবিনো-জ্যানথোক্রোমিজম নামে এক বিরল ত্বকজনিত সমস্যার কারণে।
অ্যালবিনো-জ্যানথোক্রোমিজম মূলত দুটি জিনগত অবস্থার সমন্বয়। অ্যালবিনিজমে শরীরে মেলানিনের ঘাটতির কারণে ত্বক, চুল, চোখ ফ্যাকাশে হয়। অন্যদিকে জ্যানথোক্রোমিজম প্রাণীর শরীরে অস্বাভাবিক হলুদ বা কমলা রং তৈরি করে।
আরও পড়ুন: হাঙ্গরের আক্রমণে 'পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান' অভিনেতা মারা গেছেন
গবেষকরা বলছেন, সাধারণত এ দুটি আলাদা আলাদা দেখা যায়। কিন্তু একইসঙ্গে উভয় বৈশিষ্ট্য পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। কোস্টারিকা উপকূলে পাওয়া প্রজাতির হাঙ্গরগুলো সাধারণত বাদামি রঙের হয়। এর ফলে তারা সমুদ্রতলের বালির সঙ্গে মিশে থাকতে পারে। এ ছদ্মবেশই তাদের শিকার ধরতে এবং শিকারী থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
কিন্তু এদের সোনালি রঙ ধারণের ঘটনা একেবারেই নতুন। হাঙ্গর গবেষক মেলিসা ক্রিস্টিনা মার্কেজ এ আবিষ্কারকে ‘মুগ্ধকর’ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যে প্রজাতিগুলোকে অনেক চিনি বলে মনে করি, তার মধ্যেও এত ভিন্নতা থাকতে পারে, এটি তারই প্রমাণ।’
গবেষক দানিয়েল নারাঞ্জো বলছেন, এই হাঙরের উপস্থিতি শুধু বিজ্ঞানের জন্য নয়, কোস্টারিকার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে পর্যটকরাও হয়তো একে কাছ থেকে দেখার আশায় সমুদ্রে নামবেন।
]]>