কাজী এনামকে যশোর ক্রীড়া সংস্থার সদস্য করায় ক্ষোভ ক্রীড়া সংগঠকদের

৩ সপ্তাহ আগে
বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী এনাম আহমেদকে যশোর ক্রীড়া সংস্থার সদস্য করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ক্রীড়া সংগঠকরা। অ্যাডহক কমিটি গঠনের আট মাস পর ক্রীড়া সংগঠক শ্রীনিবাস হালদারের স্থলে তাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কাজী এনাম আহমেদ যশোর-৩ আসনের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা কাজী নাবিল আহমেদের ভাই।
ছাত্র-জনতার অভুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি করার নির্দেশনা দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এ ঘোষণার প্রায় ছয় মাস পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্বারক নম্বর ৩৪.০৩.০০০০.০০৪.০৫.০২৪.০৫.০২৪.২৪-২০৭, তারিখ: ২২/০১/২০২৫ পত্র মোতাবেক যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাণ ফেরাতে সাত সদস্য বিশিষ্ট অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। 


এ অ্যাডহক কমিটির পদাধিকার বলে আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক, ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে সদস্য মোহাম্মদ শফিকউজ্জামান, সাবেক ফুটবল ও হকি খেলোয়াড় হিসেবে এ জেড এম সালেক, কোচ হিসেবে শ্রীনিবাস হালদার, ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সামিউল আলম শিমুল, ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে মাসুদ রানা বাবু, পদাধিকার বলে সদস্য সচিব জেলা ক্রীড়া অফিসার। 


এ অ্যাডহক কমিটি গঠনের আট মাস পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্মারক নম্বর ৩৪.০৩.০০০০.০০০.০০৪.০১.০০০৫.২২.৩৯৪ তারিখ: ০১/৯/২০২৫, আমিনুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক স্বাক্ষরিত পত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসারে এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মুহাম্মদ বুরহান উদ্দীনকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দু’জনের অন্তভুক্তিতে অ্যাডহক কমিটির সদস্য সংখ্যা সাত থেকে নয় জনে পরিণত হয়।


আরও পড়ুন: জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে চুয়াডাঙ্গা জেলাকে হারাল ঝিনাইদহ


সবশেষ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্মারক নম্বর: ৩৪.০৩.০০০০.০০০.০০৪.০১.০০০৫.২২.৪৭১, তারিখ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ পত্রে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য নিবাস হালদারের পরিবর্তে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন কাজী এনাম আহমেদ।
 

এ খবর রোববার সন্ধ্যায় যশোর পৌঁছালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্রীড়া সংগঠকরা। তারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এমন সিদ্ধান্তকে মানতে না নারাজ।


জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এম এ আকসাদ সিদ্দিকী শৈবাল বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এমন সিদ্ধান্ত খুবই দুঃখজনক। যা যশোরের ক্রীড়া সংগঠক শুধু নয় সমগ্র যশোরবাসীকে মর্মাহত করেছে। বিগত এক যুগের অধিক সময় ধরে কাজী ইনাম আহমেদ তার বড় ভাইয়ের ক্ষমতা বলে বিসিবির যশোরের কাউন্সিলর পদ দখল করেছিলো। তাদের দুই ভাইয়ের কাছে যশোরের ক্রীড়াঙ্গণ জিম্মি হয়েছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর তাদের দখলদারিত্ব থেকে যশোরের ক্রীড়াঙ্গন মুক্ত হয়।’


ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই মেরুকরণ। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে কাউন্সিলর হতে হলে তাকে অ্যডহক কমিটিতে থাকতে হবে। সে কারণেই এই রদবদল বলে মনে হচ্ছে। কাজী এনামকে আবার যশোরের ক্রীড়াঙ্গণে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র আমরা মেনে নেব না।


জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক কোষাধ্যক্ষ সোহেল মাসুদ হাসান টিটো বলেন, ‘কাকে খুশি করতে ফ্যাসিস্টের ভাইকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করা হলো আমরা সেটি জানতে চাই। যশোরের ক্রীড়াঙ্গণকে ধ্বংস করতে কাজী ইনামকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। হয় তাকে কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে, অন্যথায় আমরা তাকে বাদ দিতে বাধ্য করব।’

আরও পড়ুন: নভেম্বরে ইউরোপের দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ

বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটর মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ‘এটা ফ্যাসিস্ট পুর্নবাসনের অংশ। যাদের হাত ধরে যশোরের ক্রীড়াঙ্গণ ধ্বংস হয়েছে, তাদেরকে ফিরিয়ে এনে খুব অন্যায় করা হয়েছে। আমরা যশোরবাসী এই সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। অবিলম্বে কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে। অন্যথায় আমরা যশোরবাসী আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে বাদ দিতে বাধ্য করব।’


এ বিষয় যশোর জেলা প্রশাসক এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম বলেন, কীভাবে কোন মাধ্যমে কাজী এনামকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সে বিষয় বিন্দুমাত্র আমার জানা নেই। আমাদের নির্বাহী কমিটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই সংক্রান্ত একটি পত্র দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ওখান থেকে জানতে পারছি।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন