মেহেরপুরের মেহেরচন্ডি কচু, ভিন্ন স্বাদ ও মানের কারণে সারা দেশে সুখ্যাতি রয়েছে এ ফসলটির। বিগত বছরগুলোতে লাভবান হওয়ায় এবছর আশায় চাষ করেছিলেন মেহেরপুরে কৃষকরা। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া ও দরপতনের ফলে লোকসানে পড়েছে কচু চাষিরা।
সার ও বালাইনাশকের মূল্য বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে আগের তুলনায়। অথচ বিক্রি করতে উঠছে না খরচের টাকা। বর্ষায় শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় কচু উঠানো খরচ দিতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকরা। বাজার মনিটরিংয়ের দাবি তাদের।
আরও পড়ুন: ব্রজেন্দ্রর উদ্ভাবিত বারোমাসি গ্রাফটিং টমেটো চারা যাচ্ছে সারা দেশে
মুজিবনগর উপজেলার কচু চাষি মনোহর বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে কচু চাষ করে লাভবান হয়েছি। কিন্তু এবছর ঘর থেকে টাকা দিতে হচ্ছে। কীটনাশক, সার ও শ্রমিকের মূল্য আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সেই তুলনায় দাম পাচ্ছি না আমরা।’
অপর কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন কচু তুলতে পারিনি। জমি থেকে কচু তুলতে গিয়ে যে পরিমাণে খরচ হবে, সেই পরিমাণ টাকা কচু বিক্রি করেও হবে না। যার কারণে জমিতে চাষ দিয়ে ধান লাগানোর জন্য প্রস্তুত করছি। কচু চাষে এক বিঘা জমিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, পুরোটাই লোকসান।’
মেহেরপুরে উৎপাদিত কচু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হলেও এবছর উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাহিদা কমেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরাও। রপ্তানির সুযোগ তৈরির দাবি তাদের।
ব্যবসায়ী সুজন কুমার বলেন, ‘জমি থেকে কচু কিনে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করলে যাতায়াত খরচ উঠছে না। সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কচু চাষ হওয়ার কারণে চাহিদা তুলনায় সরবরাহ বেশি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিদেশের কচু রপ্তানি করা হয়। সরকারিভাবে এ উদ্যোগটি বাড়ালে মেহেরপুর থেকেও কচু রপ্তানি করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: মুখী কচু চাষে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় জীবননগরের কৃষকরা
কচু উৎপাদনে কৃষি বিভাগ সব পরামর্শ দিচ্ছে বলে জানান মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল আলম। আর ফসলটি বিদেশে রপ্তানির কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানাচ্ছে কৃষি বিপণন তারিকুল ইসলাম।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় এবার প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে।