এ ইনজেকশনের জেনেরিক নাম অ্যালটেপ্লেজ। দেশে একটি কোম্পানি বাজারজাত করে, যার
৫০ মিলিগ্রাম ইনজেকশনের দাম ৫০ হাজার টাকা। কেউ স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক করলে, যদি তার রক্তক্ষরণ না হয় এবং দ্রুত হাসপাতালে নেয়া যায় তাহলে এ ইনজেকশনে রোগীকে প্রায় পুরোপুরি সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসক শীর্ষ শ্রেয়ান রাজশাহী মেডিকেলের ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্বখ্যাত সংগঠন ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশন, ডিরেক্ট রিলিফ এবং এঞ্জেল ইনিসিয়েটিভের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব ওষুধ এনেছেন। এ কাজে তাঁকে সার্বিক সহায়তা করেছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক (আজাদ)।
আরও পড়ুন: রাজশাহী মেডিকেলে অভিযানে হাতেনাতে অনিয়ম ধরল দুদক
শীর্ষ শ্রেয়ান জানান, স্কুলের গন্ডি থেকেই গবেষণার প্রতি তার আগ্রহ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির পর বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার সাথে যুক্ত হন। এর ধারাবিহকতায় 'ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশনের' রিসার্চ প্রজেক্টে যুক্ত হয়ে তিনি একটি গবেষনাপত্র প্রকাশ করেন। গবেষণাপত্রটি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব স্ট্রোকে প্রকাশিত হয় এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক একাডেমি থেকে ‘বেস্ট পেপার’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সেই সূত্রেই ডিরেক্ট রিলিফের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক গর্ডন উইলহক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং রাজশাহী মেডিকেলে অ্যালটেপ্লেজ ওষুধের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে চান। এইভাবেই মূলত যোগাযোগের সূচনা হয়। পরে তারা ইনজেকশন ফ্রিতে দেয়ার কথা জানায়।
শীর্ষ শ্রেয়ান হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হকের (আজাদ) সঙ্গে সমন্বয় করে ইনজেকশন হাসপাতালে আনতে 'ডিরেক্ট রিলিফ' এর সাথে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে চুক্তির পর গত সোমবার ইনজেকশনগুলো হাসপাতালে পৌঁছায়।
আজিজুল হক জানান, ওষুধের মেয়াদ এক বছর অবশিষ্ট থাকতে কোম্পানিগুলো দাতা সংস্থাকে দিয়ে দেয়, যাতে গরিব দেশগুলো রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারে। ওষুধগুলো মূলত স্ট্রোক ও হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হয়।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩০ হাজার ছাড়ালো
আজিজুল হক বলেন, যে পরিমাণ ওষুধ পাওয়া গেছে, তা দিয়ে প্রায় ৫০০ রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ওষুধের মেয়াদ আছে। বুধবার থেকে হাসপাতালে এই ইনজেকশনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। নেদারল্যান্ডে তৈরি ইনজেকশনের এক কোর্সের দাম প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, এত বিপুল পরিমাণ ওষুধ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই প্রথম পাওয়া গেল।
]]>