২০০৫ সালের ১৮ আগস্ট (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী), বুদাপেস্টের ফেরেঙ্ক পুসকাস স্তাদিওনে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি স্বাগতিক হাঙ্গেরি ও আর্জেন্টিনা। ম্যাক্সি রদ্রিগেজ ও গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জের গোলে ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ফরোয়ার্ড লিসান্দ্রো লোপেজকে তুলে টিনএজ বয়সী ছোটখাট এক তরুণকে মাঠে নামালেন আর্জেন্টিনার কোচ হোসে পেকারম্যান।
এর কিছুদিন আগেই নেদারল্যান্ডসে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছেন এই তরুণ। ৬ গোল করে হয়েছেন আসরের সেরা খেলোয়াড়। চারদিকে তোলপাড় পড়ে গেল–আর্জেন্টিনার ফুটবলে এসে গেছেন 'নতুন ম্যারাডোনা'। সেই নতুন ম্যারাডোনা আর কেউ নন, তিনি লিওনেল মেসি।
আরও পড়ুন: কবে ও কোথায় বিয়ে করছেন রোনালদো ও জর্জিনা
যুবদলের পারফরম্যান্সই জাতীয় দলের দরজা খুলে দিল রোসারিওতে জন্ম নেয়া মেসির সামনে। ততদিনে ক্লাব বার্সেলোনার হয়েই আলো ছড়াতে শুরু করেছেন। ফলে পেকারম্যান পরের বছরের বিশ্বকাপ সামনে রেখে আর উপেক্ষা করতে পারেননি মেসিকে।

এবার বুদাপেস্টে সেই ম্যাচে ফিরে যাওয়া যাক। সতীর্থের পাস থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের বক্সের দিকে ছুটছিলেন মেসি, কিন্তু পেছন থেকে তার জার্সি টেনে ধরে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন ভিলমস ভানজাক। প্রথমবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানো মেসিও কনুই পেছনে বাকিয়ে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেন। আর তাতেই তার হাত লেগে যায় ভানজাকের গায়ে। আর যায় কোথা! রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখালেন মাত্রই মাঠে নামা মেসিকে। লাল কার্ড দেখানোর আগে মেসির সতীর্থরা যদিও এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, কিন্তু তাতে ভ্রুক্ষেপ করেননি জার্মান রেফারি।
রেফারি মারকুস মের্কের সেই লাল কার্ড দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও আছে বিতর্ক। অনেকের মতেই এই জার্মান রেফারি মেসির প্রতি একটু বেশিই নিষ্ঠূরতা দেখিয়ে ফেলেছিলেন। সেটি কোনোভাবেই লাল কার্ড দেখানোর মতো ফাউল ছিল না। মেসির সেই অভিষেক ম্যাচে সতীর্থ ছিলেন আর্জেন্টিনার বর্তমান কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি।
এরপর মেসি ফের আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চাপান পরের মাসেই। ৩ সেপ্টেম্বর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে তাকে মাঠে নামান কোচ পেকারম্যান।
আরও পড়ুন: ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হারে কাঁদলেন নেইমার, কোচ বরখাস্ত
তবে, জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল পেতে মেসিকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল পরের বছর পর্যন্ত। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে গোলের দেখা পান তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমে গোল করেন মেসি। সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে মেসির গোলটি ছিল তার দলের ষষ্ঠ গোল। আলবিসেলেস্তেরা সেদিন জয় পায় ৬-০ গোলে। আর সেই গোলই তাকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কনিষ্ঠতম গোলদাতায় পরিণত করে, যে রেকর্ড টিকে আছে এখনও।