আফগানিস্তানকে বয়কটের ডাক প্রত্যাখ্যান করলো ইংল্যান্ড ক্রিকেট

৩ সপ্তাহ আগে
আগামী মাসে পাকিস্তানের শুরু হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যেখানে একই গ্রুপে রয়েছে আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। তবে এই ম্যাচ বয়কটের জন্য ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি) আহ্বান জানিয়েছেন ১৬০ জন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ। তবে বয়কটের ডাক প্রত্যাখ্যান করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সূচি অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড। 

 

এই দুই দলের ম্যাচের আগে বাগড়া দিয়েছে রাজনৈতিক ইস্যু। তালেবান সরকারের একাধিক নীতির বিরোধিতার কারণে ইংল্যান্ডের রাজনীতিবিদদের একাংশ আফগানিস্তানকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। তাদের মধ্যে নাইজেল ফারাজ, জেরেমি করবিন, লর্ড কিনকে ছাড়াও আরও অনেকেই আছেন। 

 

নারীদের মানবাধিকার খর্ব করার অভিযোগ তুলে তালেবান প্রশাসন জানিয়েছেন, তালেবান প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিক ইসিবি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কট করা উচিৎ। 

 

আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের আহ্বান

 

বয়কটের দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ না খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড। অবশ্য আগে থেকেই আফগানদের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলা থেকে বিরত রয়েছে। একইসঙ্গে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়ায় নারীদের মানবাধিকারসহ সব বিষয় নিয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার আহবান জানিয়েছেন ইসিবি প্রধান। 

 

তিনি বলছেন, ‘ইসিবি শক্তভাবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের অধীনে নারী ও মেয়েদের সঙ্গে বিরূপ আচরণের বিরোধীতা করে আসছে। আইসিসির সংবিধানেই বলা আছে যে, প্রতিটি সদস্য দেশ নারী ক্রিকেটের সম্প্রসারণ ও উন্নতির প্রতিশ্রুতি দেবে। সেটি বিবেচনায় নিয়েই ইসিবি আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট ম্যাচ থেকে বিরত থাকে। ইসিবি তাদের এই পদক্ষেপ সামনেও অব্যাহত রাখবে। কোনো সদস্য দেশের একতরফা আচরণের চেয়ে আইসিসির দৃষ্টিভঙ্গি অনেক বেশি প্রভাবশালী। একইসঙ্গে সারাবিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিও আমরা সম্মান জানাতে চাই।’ 

 

আরও পড়ুন: লিটন-শান্তর অফফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না সালাউদ্দিন

 

ইসিবি প্রধান আরও বলেন, ‘আমরা আফগান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগ ও বয়কটের দাবিও বুঝতে পারছি। কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচ বয়কট তালেবান সরকারের স্বাধীনতা দমন ও আফগান সমাজকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার সেই চেষ্টাকে অসাবধানতাবশত সমর্থন দিয়ে ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে ক্রিকেটই হতে পারে আফগান সমাজে এখনও বেঁচে থাকার আশা ও ইতিবাচকতা টিকিয়ে রাখার উৎস। ইসিবি আফগান নারীদের প্রতি বিরূপ আচরণের সমাধান পেতে চায়, একইসঙ্গে যাতে আফগান মানুষের ওপরও কোনো খারাপ প্রভাব না পড়ে।’ 

 

‘আমরা বিষয়গুলো নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকার, আইসিসি, অন্যান্য ক্রিকেট বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাব। যাতে আলোচনায় সম্ভাব্য সকল পরিবর্তনযোগ্য বিষয় উঠে আসতে পারে।’ 

 

এর আগে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের উদ্দেশ্যে ব্রিটেনের রাজনীতিবিদরা বলেছেন, ‘তালেবানের অধীনে আফগানিস্তানে নারীদের প্রতি যে ভয়াবহ আচরণ করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্য আমরা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট কর্তাদের আহ্বান জানাচ্ছি। ইসিবিকে আমাদের অনুরোধ, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আসন্ন ম্যাচটি বয়কট করা হোক। এই ধরনের জঘন্য আচরণ বরদাস্ত করা যায় না। আফগানিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই লিঙ্গবৈষম্য রুখে দাঁড়ানো উচিৎ। আফগান নারীদের সহমর্মিতার বার্তা দেওয়ার অনুরোধ করছি ইসিবিকে। আশা করি আফগান নারীদের আমরা নিরাশ করব না।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন