মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে পেচারদ্বীপ সৈকতে গোসলে নামেন চবির তিন শিক্ষার্থী- অরিত্র হাসান (২২), আসিফ আহমেদ (২২) ও কে এম সাদমান রহমান (২২)। এর মধ্যে সাদমানের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি দুই জন এখনো নিখোঁজ।
নিহত সাদমান ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। নিখোঁজ অরিত্র ও আসিফ একই বিভাগের ও একই আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, দুজনেই বগুড়ার বাসিন্দা।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত লাইফ গার্ড সদস্যরা জেড স্কি ব্যবহার করে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাগরে তল্লাশি চালান। সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চললেও নিখোঁজদের সন্ধান মেলেনি।
তিনি বলেন, 'পেচারদ্বীপে কোনো স্থায়ী লাইফ গার্ড সেবা নেই। সমুদ্র তলদেশ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।'
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. তানহারুল ইসলাম বলেন, 'সাগর উত্তাল ও অন্ধকার হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হবে।'
আরও পড়ুন: হিমছড়ি সৈকতে গোসলে নেমে চবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২
এদিকে সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী, ফায়ার সার্ভিস, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানানো হয়।
চবির আরও দুই শিক্ষার্থী ফারহান ও রিয়াদ জানান, সোমবার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ করে তারা পাঁচজন বন্ধু কক্সবাজারে ঘুরতে আসেন। পেচারদ্বীপে একটি রিসোর্টে রাত কাটিয়ে মঙ্গলবার ভোরে সৈকতে নামেন।
তারা বলেন, 'আমরা বলেছিলাম সাঁতার না জানলে সাগরে না নামতে, কিন্তু সাবাব, আসিফ ও অরিত্র ছবি তুলতে তুলতে গভীর জলে চলে যায়। হঠাৎ বড় ঢেউ এসে তিনজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।'
নিহত সাদমানের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক আপেল মাহমুদ জানান, সৈকতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে পর্যটকেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে না নামেন।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থা জানায়, চলতি মাসেই পেচারদ্বীপে এ ধরনের ঘটনা আবার ঘটল। গত মাসেও এখানে গোসলে নেমে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।