দেশের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে শুক্রবার (৪ জুলাই) এ তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেভ দ্য রোড।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় মাসে সারা দেশে ১৭ হাজার ৯৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি অসংখ্য পরিবার পড়েছে মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে।
শুধু সড়কপথ নয়, এ সময়ে নৌপথেও ৬১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪ জন নিহত ও ৪৫১ জন আহত হন। অন্যদিকে রেলপথে ৫২৬টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৮৪ জন এবং নিহত হয়েছেন আরও ১৪ জন।
সেভ দ্য রোড জানায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি ও থ্রি হুইলার জাতীয় যানবাহনের সঙ্গে জড়িত দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। এ ধরনের যানবাহনের কারণে ৭৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এরপর রয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৬৭৩ জন, বাস দুর্ঘটনায় ৮২৫ জন এবং ট্রাক-পিকআপ-লরি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় ৪৮৫ জনের মৃত্যু।
আরও পড়ুন: বন্ধুর বিয়ে খেতে গিয়ে ভাইয়ের মৃত্যু, লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সামিরা
প্রতিবেদনে শুধু দুর্ঘটনাই নয়, সড়কে নিরাপত্তাহীনতার চিত্রও উঠে এসেছে। জানানো হয়, গত ছয় মাসে সড়কপথে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ১১৮টি। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০৪ জন। এছাড়া নারী শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ৬১৪টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২টি।
সেভ দ্য রোডের ৭টি দাবি হলো:
১. মিরেরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।
২. ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে।
৩. সড়ক পথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপার দ্বারা পরিবহন চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪. স্থল-নৌ-রেল ও আকাশপথে দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে দিতে হবে।
৫. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটেলিয়ন’ গঠন করতে হবে।
৬. সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করার মধ্যদিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটেলিয়ন গঠনের আগ পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সব সড়কের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সব পরিবহন চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে।
৭. ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা সড়ক, ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে আর কোনো প্রাণ দিতে না হয়।