২০২৩ সালের খুলনা সিটি নির্বাচনের ফল বাতিল চাইলেন মুশফিক

২ সপ্তাহ আগে
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ২০২৩ সালের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান।

শনিবার (১০ মে) সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে ওই নির্বাচনের ফল বাতিলের আহ্বান জানান এবং বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে রিট দায়েরের তথ্য জানান। আদালত ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে তার রিট নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মুশফিক।


সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক দাবি করে বলেন, ‘২০২৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছিল ডিজিটাল ধোঁকাবাজির এক দৃষ্টান্ত। ইভিএম ব্যবহার করে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আদালতের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন দ্রুত এই প্রহসনের অবসান ঘটাবে এবং আমি জনগণের রায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো।’

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির সমাবেশে পানি ছিটানো নিয়ে ডিএনসিসির ব্যাখ্যা

২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুশফিক। নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ২১৮ ভোট—যা পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ স্থান, যা প্রাপ্ত ভোটের ৬.৭২ শাতংশ । ফলে জামানত হারাতে হয় তাকে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ২৩.৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী তালুকদার আব্দুল খালেকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু ৭.০৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন।


মুশফিকের অভিযোগ, ভোটের দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ওঠে। দুপুরের পর অধিকাংশ প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ফল প্রকাশের পরদিন তিনি সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলেও জানান।


নির্বাচনের পরে তিনি ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ফল বাতিলের আবেদনপত্র দেন। যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ৫ মে হাইকোর্টে রিট করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৬ মে চার সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের।

আরও পড়ুন: রাতভর অভিযান, ভোরে গ্রেফতার আইভী

খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুদিন ধরে আলোচিত মুশফিক একসময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯০ সালে খুলনা আর্ট কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস ও পরে জিএস নির্বাচিত হন তিনি। তবে সেই সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলার অভিযোগ ওঠে। নগরীর আমতলা মোড়ের টুটুল হত্যা মামলায় প্রথমে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেও পরে উচ্চ আদালত থেকে খালাস পান। আলোচিত জাতীয় পার্টি নেতা আবুল কাশেম হত্যা মামলার আসামিও ছিলেন তিনি।


২০০৮ সালে বাগেরহাট-১ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন। এরপর কিছুদিন রাজনীতি থেকে আড়ালে থাকলেও ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেবারও মাত্র ১ হাজার ৭২ ভোট পেয়ে জামানত হারান।


প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের কেসিসি নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর করা মামলার একতরফা শুনানি আগামী ২৬ মে অনুষ্ঠিত হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন