১৬ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ফের আন্দোলনে সিএইচসিপিরা, রাত কাটালেন অফিসেই

২ সপ্তাহ আগে
দীর্ঘ ১৬ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে বিএমআরসি ভবনে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট কার্যালয় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অবস্থান কর্মসূচির কারণে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আখতারুজ্জামানসহ কর্মকর্তারা একপ্রকার অফিসে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এদিকে রাতেও অফিস ত্যাগ না করে সিএইচসিপি কর্মীরা সেখানেই রাত্রীযাপন করেন।

 

অবস্থানকারী সিএইচসিপি কর্মীরা জানান, ১৬ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় তারা পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

 

তারা বলছেন, বেতন নেই, কোথায় থাকব? তাই অফিসেই শুয়ে পড়েছি।

 

অবস্থানস্থলে কর্মীদের হাতে ছিল নানা দাবিদাওয়া সংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। এর একটিতে লেখা ছিল— ‘বেতন চাই, ন্যায্য প্রাপ্য চাই, ১৬ মাসের বকেয়া পরিশোধ করতেই হবে’, আরেকটিতে— ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানেন নাকি, ১৬ মাসের বেতন বাকি’।

 

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানকারী রাসেল আহমেদ নামের এক সিএইচসিপি কর্মী বলেন, 

আমরা স্বাস্থ্যখাতের মাঠপর্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অথচ ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

 

আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অক্টোবরের বেতন প্রস্তাব নিয়ে যা জানা গেল

 

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনের ২৪(ঙ) ধারায় আমাদের পদায়ন ও আর্থিক পাওনা পরিশোধের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। যতক্ষণ পদায়ন না দেওয়া হবে, আন্দোলন চলবে।

 

অবস্থানকারী সিএইচসিপি কর্মীরা অভিযোগ করেন, ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোয় নতুন পদ সৃষ্টি হলেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো নিয়োগ বা দায়িত্ব বণ্টন করা হয়নি। এতে কর্মীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

 

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কয়েক দফা আলোচনা হলেও এখনও কোনো সমাধান মেলেনি। অবস্থানের কারণে মঙ্গলবার সারাদিন ট্রাস্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে।

 

এদিকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন,

 কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার। কর্মীদের চাকরি তো আছেই এবং তাদের নিয়োগ অনুমোদনসহ সবকিছু আছে। এই কর্মীদের শুধু বেতন দেওয়াটাই বাকি ছিল। আমি এই কর্মীদের বেতনটা দেবে এই মর্মে একটি আদেশ জারি করেছিলাম কারণ তাদের শুধু এদেরকে বেতন দিয়ে দিলেই হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমি যে অর্ডার করেছিলাম, মন্ত্রণালয় সেটা স্থগিত করেছ। 

 

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয় যখন এই সিদ্ধান্তটি স্টোরিং করা হলো, তখন এর কোনো সুস্পষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করেনি তারা। আমার মনে হয়, যেহেতু বিষয়টি এখন মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করছে, সেহেতু আমাদের এখানে আর কিছুই করার নেই।

 

এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, 

এটি ৬ শতাধিক কর্মীর ভবিষ্যৎ ও জীবিকার বিষয়। তবে আমরা যে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি, মনে হয় না মন্ত্রণালয়ের কেউ এই চিঠি পড়েছে। সমস্যাটা হলো, মন্ত্রণালয়ে আগের সব কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ায় এই কর্মীদের কপালটা পুড়তে যাচ্ছে। কর্মীদের বেতন ভাতার বিষয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, এটি কাম্য নয়।

 

অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, বকেয়া বেতন ও পদায়নের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন