আদালতে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন, ‘হিন্দু এনডাওমেন্ট বোর্ডের (মন্দির বা দেবোত্তর সম্পত্তির পরিচালনা করে যারা) সদস্য হিসেবে কোনো মুসলিমকে সদস্য হতে দেবে সরকার? খোলাখুলি বলুন। যদি না দেয়, তবে ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন?’
তিনি আরও বলেন, এই আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।
‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তি ওয়াক্ফ হিসেবে গণ্য হয়। এসব সম্পত্তির কাগজপত্র না থাকলেও ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ আইনে মুসলমানদের বলে গণ্য হয়। তবে নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমি অর্থাৎ কাগজপত্র আছে এমন জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।
আরও পড়ুন: বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস /মুসলিমদের বিক্ষোভে উত্তাল ভারত
পিটিশন আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিবাল নামে এক আইনজীবী বলেন, ওয়াকফ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কয়েক হাজার বছর আগে ওয়াকফ তৈরি হলেও এখন কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে। এটি বড় সমস্যা ও সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াকফ বোর্ডে জেলা প্রশাসককে রাখা হয়েছে। তিনি সরকারের অংশ। তিনি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা অসাংবিধানিক হবে।’
পিটিশন আবেদনকারীদের আরেক আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, ভারতের ৮ লাখ ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে ৪ লাখই ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’। এটা অনেক পুরনো ও এসব সম্পত্তির ক্ষেত্রে কারও কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। নতুন আইনে এসব সম্পত্তির বৈধ কাগজ চাওয়া হবে। আর কেউ কাগজ দিতে না পারলে তাতে রাষ্ট্রের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ভারতে যেভাবে ‘দখল’ করা হচ্ছে মুসলিমদের বিপুল সম্পত্তি
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্টও ওয়াকফ জমির ওপর তৈরি। অর্থাৎ সব ওয়াকফ বাই ইউজার বা ব্যবহারভিত্তিক ওয়াকফ ভুল নয়। এই জমি ওয়াকফ সম্পত্তির অংশ, এই জমির কোনো কাগজপত্র নেই। যেহেতু আদালত এই জমি ব্যবহার করছে, সেহেতু আদালত এই জমির মালিক।’
১৩, ১৪ বা ১৫ শতাব্দীতে তৈরি মসজিদের কাগজপত্র পাওয়া অসম্ভব বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার
]]>