হাজার মাসের চেয়ে উত্তম যে রাত

৪ সপ্তাহ আগে
আরবি বার মাসের মধ্যে রমজান মাসের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। এ মাসের শেষ দিকে এমন একটি রাত রয়েছে, যে রাতটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে রাতকে আমরা লাইলাতুল কদর অথবা শবে কদরের রাত বলি। কোরআন- হাদিসে এ রাতের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ রাত কবে, কততম রমজানে আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট জানানো হয়নি। যেন আমরা প্রতিযোগিতামূলক রমজানের শেষ দিকের প্রতিটি রাত ইবাদতের মাধ্যমে কাটিয়ে উক্ত রাত অন্বেষণ করি।

পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকেই আল্লাহর কেতাবে বার মাসের হিসাব বিদ্যমান। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন,

 

নিশ্চয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি” (আত -তাওবা: ৩৬) 

 

পৃথিবীর সূচনাকাল হতে বহু রমজান মাস গত হয়েছে, কেউ খোঁজ খবর রাখেনি। কিন্তু যেদিন থেকে রমজান মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে, সেদিন থেকে এ মাস অন্যান্য মাসের তুলনায় শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, যে রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে, সে রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ঘোষিত হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: জাকাতের নিসাব ও সম্পদের হিসাব

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন, 

 

আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে। শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ (আল-কদর: ১-৩) পবিত্র কোরআনের অন্য জায়গায় বর্ণিত হয়েছে, অবশ্যি আমরা একে একটি বরকতপূর্ণ রাতে নাযিল করেছি। (আদ-দুখান: ৩) উপরের আয়াত গুলো থেকে প্রতীয়মান হয়, পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে কদরের রাতে। যে কারণে উক্ত রাতটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।

 

শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় শবে কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (মুসলিম: ৭৬০; বুখারি: ২০১৪)

 

হাজার মাসের চেয়ে উত্তম এ ফজিলতপূর্ণ রাত রমজানের শেষ দিকে অন্বেষণ করতে বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, 

 

তোমারা রমজানের শেষ দশকে লাইতুল কদর অন্বেষণ কর। (বুখারি: ২০২০) বিশেষ করে শেষ দশকের বেজোড় রাত গুলোতে। কেননা অন্য এক হাদিসে রয়েছে, ‘নবীজির সময়ে কিছু সাহাবী রমজানের শেষ সাতদিনে লাইতুল কদর স্বপ্ন দেখেছিলেন। তখন মহানবী (সা.) বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি যে, তোমাদের স্বপ্ন রমজানের শেষ সাত দিনের ব্যাপারে একাত্মতা ঘোষণা করছে। অতএব তোমাদের মধ্যে কেউ যদি লাইতুল কদর অন্বেষণ করতে চায়, সে যেন রমজানের শেষ সাতদিনে তা অন্বেষণ করে। (বুখারি: ২০১৫)

 

এই রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বান্দাদের ডেকে ডেকে বলেন, ‘কে আছ অসুস্থ, আমার কাছে চাও আমি আরোগ্য দান করব, কে আছ অভাবগ্রস্ত, আমার কাছে চাও আমি প্রাচুর্য দান করব, কে আছ বিপদগ্রস্ত আমার কাছে চাও, আমি বিপদমুক্ত করে দেব।’ এভাবে বান্দার সব প্রয়োজনের কথা বলতে থাকেন। (মুসনাদে আহমাদ)

 

আপনি আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস মহান রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে চেয়ে নিতে পারেন। তিনি দিতে চান, আপনি না নিলে তিনি অসন্তুষ্ট হন। মহানবী (সা.) বলেন, যে আল্লাহর কাছে চায় না, আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত হন। (তিরমিজি: ৩৩৭৩)

 

আরও পড়ুন: মাথায় তেল ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে?

 

রমজান মাস এলে মহানবী (সা.) আরও বলতেন, 

 

এ মাসে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃতপক্ষেই হতভাগ্য। (মুসনাদে আহমাদ: ৭১০৮)

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদেরকে উক্ত রাতের পরিপূর্ণ ফাজায়েল অর্জন করার তাওফিক দান করুক, আল্লাহুম্মা আমিন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন