বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্যে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশের ৬টি বিভাগে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ৩৮৬টি। এসব অভিযানে মামলা করা হয় ২ হাজার ৬১৮টি, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয় ১৩ জনকে, জরিমানা আদায় করা হয় ৬৫ লাখ ২১ হাজার ১০০ টাকা এবং ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয় ৩৬৪টি গাড়ি।
বিআরটিএ জানিয়েছে, পুরোনো বাস অপসারণ এবং সড়কে যানবাহনের নানা অনিয়ম রোধে তাদের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিআরটিএর কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছি। কারণ এখানে আবার মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হওয়ার একটি সমস্যা রয়েছে। আমরা আরএফআইডি চালু করেছি। এজন্য আমাদের কাছে সব গাড়ি বাধ্যতামূলকভাবে আসতে হবে এবং আমরা তা ডিটেক্ট করি। ফলে এখন কোনো গাড়ি ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়া যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: সড়কে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, লক্কর-ঝক্কর যানবাহন ঠেকাতে কতটা কার্যকর বিআরটিএ?
সড়কে থাকা পুরোনো লক্কড়-ঝক্কর গাড়ি সরিয়ে নিতে বিআরটিএর চালানো অভিযানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি জানান পরিবহন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, মেয়াদ বিবেচনায় বাণিজ্যিক মোটরযান বাতিলের পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হবে। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘লক্কড়-ঝক্কর এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ এক নয়। কারণ ভালো গাড়িও চালানোর অদক্ষতা বা রাস্তার জন্য চলতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গাড়িকে ইকোনমিক লাইফের ভিত্তিতে বাদ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, তা দেশের জন্য অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে।’
অন্যদিকে, পেশাদারিত্বের প্রশ্নে বিআরটিএ পিছিয়ে আছে বলে মত পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হকের। তার মতে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলার দায় বিআরটিএর। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, গাড়ির মান পরীক্ষায় ফিজিক্যাল অবস্থা দেখতে হয়, সেফটি দেখতে হয়, লাইটিং দেখতে হয়, ইন্ডিকেটর দেখতে হয়, পলিউশনের প্যারামিটারগুলোও পরীক্ষা করতে হয়। তবে এগুলো না দেখেই বিআরটিএ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যখন অভিযান সম্পূর্ণভাবে চালানো হয়, তখনই বোঝা যায় প্রতিষ্ঠানটি পেশাদারি মানদণ্ড পূরণ করছে না।’
পরিবহন খাত সংস্কারে বর্তমান সরকারের কাছে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া যায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ড. শামসুল হক বলেন, ‘এই সরকারের প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। রাজনৈতিক সরকার অনেক কারণেই অনেক কিছু করতে পারে না। কিন্তু এই সরকারও এটা করতে পারলো না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, কারণ এটি সংস্কারের বিষয়।’
বিআরটিএর প্রতিটি সার্কেলে থাকা ফিটনেস যাচাইয়ের স্থান ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হলে সনদ দেয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও স্বচ্ছ হবে বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা।
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
১০







Bengali (BD) ·
English (US) ·